রেস্তোরাঁর মালিককে মারধর করার অভিযোগ উঠল অভিনেতা তথা পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের তৃণমূল বিধায়ক সোমহম চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। অভিনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিউটাউনের এক রেস্তোরাঁর মালিককে চড়-ঘুষি-লাথি মারেন সোহম। দেওয়া হয় হুমকিও। অন্যদিকে, অভিনেতার দাবি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে গালিগালাজ করছিলেন রেস্তোরাঁর মালিক। তাই তিনি মেরেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সন্ধ্যায়। নিউটাউনে একটি রেস্তোরাঁর সামনে গাড়ি রাখা নিয়ে বচসায় জড়িয়ে পড়েন অভিনেতা সোহম। সূত্রের খবর, সোহমের শ্যুটিং চলাকালীন রেস্তোরাঁর সামনে অভিনেতা ও শ্যুটিং ইউনিটের গাড়ি রাখা ছিল। রেস্তোরাঁ মালিকের দাবি, একটা পার্কিং খালি করতে বললে, হঠাৎই সোহম চক্রবর্তীর নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁর উপর চড়াও হন।
রেস্তোরাঁর মালিকের দাবি, কোনওরকম কমার্শিয়াল ডিল ছাড়াই তাঁর রেস্তোরাঁয় শুটিং করতে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শুট চলাকালীন শুটিং ইউনিটকে একটা পার্কিং প্লেস খালি করতে বলা হয়। তাই নিয়ে হোটেলের কর্মচারী ও শুটিং ইউনিটের মধ্যে তরজা বাধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তরজা চলাকালীন ইউনিটের একজন এসে মালিককে জানান, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের লোক সোহম। এর ফল খারাপ হতে পারে। তখন রেস্তোরাঁর মালিক জবাব দেন, “তা তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বন্ধুই হোন বা নরেন্দ্র মোদির বন্ধু, আপনারা ঝামেলা বাড়াবেন না, আমার গেস্ট আসবেন।“
রেস্তোরাঁর মালিক জানান, এরপর তিনি যখন রেস্তোরাঁর দোতলায় উঠতে যান, তখন সোহম এসে তাঁকে ঘুষি মারেন। তিনি বলেন, "সোহম আমাকে ঘুষি মারতে মারতে বলেন, ‘দেখবি পাওয়ার কী হয়?’ তারপর আমাকে লাথি মারেন। আমার কলার চেপে ধরা হয়। এক জন অভিনেতা এবং বিধায়কের ন্যূনতম শিক্ষা নেই। আমাকে রেস্তোরাঁ বন্ধ করার হুমকি দিয়েছেন। এক জন জনপ্রতিনিধি উন্নয়নমূলক কাজ না করে গুন্ডাগিরি করছেন।“
বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন বলে দাবি রেস্তোরাঁর মালিকের। এবং পুরো ঘটনাটি সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়েছে। প্রয়োজনে তিনি সেটি পুলিশের হাতে তুলে দেবেন বলেও জানান।
যদিও সোহম বলেন, “আমি শুটিং করছিলাম। চিৎকার শুনে ছুটে আসি। আমার এক নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কাধাক্কি দিচ্ছিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করি, কী হয়েছে? পুলিশের গায়েও হাত তোলে। আমাকে গালাগালি করে। অভিষেককে গালাগাল করে। এটা শুনে মাথাগরম হয়ে যায়। তখন আমি বুঝিয়েছি যে সে কে।“
রেস্তোরাঁর মালিককে মারধরের কথা স্বীকার করে নেন অভিনেতা। সোহম বলেন, “সে তো করেছিই। গালাগালি করবে এবং অভিষেককে নিয়ে গালাগালি করেছে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। চারটে চড় মেরেছি। ধাক্কা দিয়েছি। অভিনেতারাও মানুষ। আমাদেরও আবেগ আছে। তারই প্রতিফলন হয়েছে। ছোটখাটো বিষয়। পুলিশ দেখছে।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন