অবশেষে সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি পেলেন অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী। অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মামলায় রিয়া এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে লুক আউট সার্কুলার জারি করেছিল সিবিআই। যা বাতিল করে দেয় বোম্বে হাইকোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় মহারাষ্ট্র সরকার। শুক্রবার বোম্বে হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখেছে শীর্ষ আদালত।
শুক্রবার এই মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে। শুনানিতে আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় মহারাষ্ট্র সরকারকে। শুনানিতে দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, "আমরা সাবধান করে দিচ্ছি। অভিযুক্ত শুধুমাত্র একজন হাই প্রোফাইল ব্যক্তি হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে অযথা মামলা করা হচ্ছে। এর ফল ভালো হবে না।"
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৪ জুন মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় নিজের ফ্ল্যাটে উদ্ধার হয় অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ। দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে মুম্বই পুলিশ। যদিও পরবর্তীতে সুশান্ত সিং রাজপুতের বাবা পাটনা পুলিশে এক অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী এবং তাঁর পরিবার অভিনেতাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দিয়েছেন।
এরপরেই অভিনেতার মৃত্যুর তদন্তভার যায় সিবিআই-এর হাতে। সে বছরই সিবিআই অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী তাঁর বাবা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী, মা সন্ধ্যা এবং ভাই সৌভিকের নামে একটি লুক আউট সার্কুলার জারি করে। এই লুক আউটের সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ না থাকায় তা বাতিল করে বোম্বে হাইকোর্ট। সেই সময় বিচারপতি জানান, অভিনেত্রী এবং তাঁর পরিবারের সমাজে নামডাক আছে এবং তাঁরা প্রত্যেকেই এই মামলার তদন্তে সহযোগিতা করেছেন।
এর পাশাপাশি, আরও একটি মামলায় নাম জড়ায় রিয়া চক্রবর্তীর। সুশান্ত সিং রাজপুতের পরিবারের তরফে রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অভিনেতার অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। সেই মামলার তদন্ত শুরু করে ইডি।
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর থেকেই তাঁর বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর দিকে আঙুল তুলেছিলেন একাংশ। তাদের দাবি ছিল সুশান্তের মৃত্যুর জন্য রিয়াই দায়ী। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন রিয়া, দাবি অনেকের। ওই মৃত্যুর তদন্তে নেমে মাদক সংক্রান্ত মামলায় রিয়াকে গ্রেফতার করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। গ্রেফতার হতে হয়েছিল অভিনেত্রী ও তাঁর ভাইকে। পরে এক লক্ষ টাকার বন্ড দিয়ে বম্বে হাইকোর্ট জামিন দেয় রিয়াকে।
সেই সময় বম্বে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, কেউ মাদক কেনার টাকা দিলেই এটা প্রমাণ হয় না যে ওই ব্যক্তি অবৈধ মাদক পাচারের সাথে যুক্ত। আবার এটাও প্রমাণ হয় না যে কাউকে টাকা দেওয়া মানেই তাকে মাদক সেবনে উৎসাহিত করা না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন