মুম্বাইয়ের পর গোয়াতেও বাতিল হয়ে গেল কমেডিয়ান মুনাব্বর ফারুকির স্ট্যান্ড আপ কমেডি শো। আগামী সপ্তাহে পানাজী মলে এই শো হবার কথা ছিলো। এক হিন্দু সংগঠনের আপত্তিতে বন্ধ করে দেওয়া হয় এই শো। এর আগে গত অক্টোবর মাসের ২৯-৩১ অক্টোবর মুম্বাইতে বজরঙ দলের আপত্তিতে মুনাব্বর ফারুকির শো বাতিল করা হয়েছিলো।
গোয়ায় মুনাব্বর ফারুকির শো-এর উদ্যোক্তা এলভিসি কমেডি-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১৫ নভেম্বর গোয়ায় ফারুকির শো বাতিল করা হয়েছে। সূত্র অনুসারে শনিবার রাতে পানাজী পুলিশ স্টেশনে শো-এর উদ্যোক্তাদের সঙ্গে এক আলোচনার পর এই অনুষ্ঠান বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মুনাব্বর ফারুকির শো অনুষ্ঠিত হলে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে জানানো হয়। এলভিএফ কমেডির প্রতিষ্ঠাতা ওয়ারেন ভারগিস এই প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন।
এর আগে শনিবার গোয়ার বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠন মুনাব্বর ফারুকির শো বন্ধ করতে হবে বলে জানিয়ে দেয়। তাদের অভিযোগ মুনাব্বর ফারুকি হিন্দু দেবদেবীদের নিয়ে কমেডি করেন।
উত্তর গোয়ার জেলাশাসকের কাছে স্থানীয় হিন্দু সংগঠন জনজাগ্রুতি সমিতির সদস্যরা এক স্মারকলিপি পেশ করে জানায় ২০২২ গোয়া বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ধরণের অনুষ্ঠান বিতর্ক বাড়াতে পারে। তাই এই অনুষ্ঠান বাতিল করা উচিৎ।
সমিতির পক্ষ থেকে মুখপাত্র জয়েশ থালি জানান, হিন্দু দেবদেবীদের নিয়ে কমেডি করার জন্য মুনাব্বর ফারুকি মধ্যপ্রদেশে ৩৭ দিন জেল খেটেছেন। গোয়ায় আগামী বছরের গোড়াতে নির্বাচন। এই মুহূর্তে এই ধরণের অনুষ্ঠান হলে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। যদি প্রমোদ মুথালিককে গোয়ায় নিষিদ্ধ করা হয় তাহলে মুনাব্বর ফারুকিকে কেন নিষিদ্ধ করা হবেনা?
প্রসঙ্গত, কর্ণাটকের এক হিন্দু সংগঠন শ্রী রাম সেনার প্রধান প্রমোদ মুথালিককে ২০১৪ সালে থেকে গোয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি গোয়ায় এসে গোয়ার পশ্চিমি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন।
উল্লেখ্য, এই বছরের ১ জানুয়ারি ফারুকি ও আরও ৪ জনকে ইন্দোরে গ্রেপ্তার করা হয় বিজেপির এক বিধায়কের ছেলের অভিযোগের ভিত্তিতে। যদিও ফারুকির আইনজীবীর দাবী ছিলো ওইদিন ফারুকি ওই অনুষ্ঠানে কোনো মন্তব্য করেননি। আদালতে ফারুকির আইনজীবী জানান, ১লা জানুয়ারির ওই অনুষ্ঠানে মুনাব্বর ফারুকিকে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো। তিনি ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও নিজে অংশগ্রহণ করেননি।
যদিও হিন্দু দেবদেবীর নামে ইন্দোরে এক কমেডি শোয়ে 'আপত্তিকর' মন্তব্য করার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এরপর ৬ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ইন্দোরের সেন্ট্রাল জেল থেকে ছাড়া পান ফারুকি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন