প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কে কে-র স্মরণে বিশেষ ডুডল (Doodle) প্রকাশ করেছে গুগল (Google)। ডুডলে বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পীর যাত্রাপথের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছে গুগল।
কে কে নামেই সঙ্গীত জগতে পরিচিত তিনি। প্রয়াণের ২ বছর পরেও আজও তিনি লক্ষ লক্ষ অনুরাগীদের মনে সমানভাবে জনপ্রিয়। ২৫ অক্টোবর সঙ্গীত শিল্পীকে বিশেষ সম্মান জানানোর কারণ হল ১৯৯৬ সালে আজকের দিনে প্লে-ব্যাক সিঙ্গার হিসেবে অভিষেক করেন কে কে। সেই দিনটাকে স্মরণ করার জন্যই এই ডুডল তৈরি করেছে গুগল।
১৯৬৮ সালের ২৩ আগস্ট দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন কে কে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কিরোরী মাল কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি। প্রথম দিকে মার্কেটিং নিয়ে কাজ করলেও পরে পেশা হিসেবে সঙ্গীতকে বেছে নেন কেকে। ১৯৯৪ সালে ভারতের জনপ্রিয় শিল্পীদের কাছে নিজের রেকর্ড করা টেপ দিয়েছিলেন। তারপর থেকে বাণিজ্যিকভাবে জিঙ্গেলস তৈরি শুরু করেন। ১৯৯৬ সালের ২৫ অক্টোবর ‘মাচিস’ সিনেমাতে বিশাল ভরদ্বাজের সুরে ‘ছোড় আয়ে হাম’ গানের মাধ্যমে প্লে-ব্যাক সিঙ্গার হিসেবে আত্মপ্রকাশ হয় কে কে-র।
এরপর ১৯৯৯ সালে বলিউড ছবি ‘হাম দিল দে চুকে সনম’-এ কে কে-র গাওয়া গান ‘তড়প তড়প কে ইস দিল’ গানটি ঝড়ের গতিতে জনপ্রিয় হয়। এই বছরই তাঁর প্রথম অ্যালবাম ‘পল’(সময়)–এ সুর দেন বন্ধু লেসলী লেউইস। এই অ্যালবামের ৮টি গানই খুব জনপ্রিয় হয়। মুক্তির পর দেশের নতুন প্রজন্মের ঠোঁটে ঠোঁটে ছড়িয়ে ‘পল’ আর ‘ইয়ারো’ গান দুটি। বলিউডে কে কে’র হাত ধরে জন্ম নেয় নতুন এক সঙ্গীত ঘরানা ‘ইন্ডি-পপ’।
হিন্দি, বাংলা, তামিল, তেলেগু, কান্নাড়া, মালায়লাম, মারাঠি, গুজরাটি ও অন্যান্য ভাষাতেও গান গেয়েছেন এই শিল্পী। ৫০০ এরও বেশি হিন্দি গানে গলা দিয়েছেন তিনি। হিন্দি ছাড়া অন্য ভাষার গান মিলিয়ে তাঁর ডিস্কোগ্রাফিতে গানের সংখ্যা ১২০০ এরও বেশি। সিনেমার গানের পাশাপাশি টেলিভিশন, মিউজিক শো-তেও গেয়েছেন তিনি। এ. আর রহমান থেকে শুরু করে গুলজার, বিশাল ভরদ্বাজ, অনু মালিক, প্রীতম, সেলিম-সুলেমন, রশিদ খান, শান্তনু মৈত্র, জিৎ গাঙ্গুলি - সকলের সাথেই কাজ করেছিলেন কে কে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে কলকাতার এক নামী কলেজের অনুষ্ঠানে এসে মৃত্যু হয় কে কের। নজরুল মঞ্চে আয়োজন করা হয়েছিল অনুষ্ঠানটির। গান গাইতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন কে কে। অভিযোগ ওঠে, আসন সংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি দর্শক উপস্থিত ছিলেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় ফায়ার এক্সটিঙ্গুইসার স্প্রে করতে হয়। সময়ের আগেই অনুষ্ঠান শেষ করে হোটেলে ফিরে গেলে সেখানেই জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান তিনি। মাথায় ও ঠোঁটে চোটও লাগে তাঁর। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ৩১ মে তাঁর মৃত্যু হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন