প্রয়াত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছিল গোটা দেশের প্রত্যেকটি মানুষ। শুধুমাত্র বিনোদন জগত নয়, কিংবদন্তির মৃত্যুতে শ্রদ্ধা জানিয়েছিল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও। শেষ যাত্রায় শামিল হয়েছিলেন প্রত্যেকে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নিজেদের মতো করে সবাই তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। তাঁর শেষযাত্রায় দেখা গিয়েছিল শাহরুখ খান ও তাঁর ম্যানেজার পূজা দাদলানিকে।
শাহরুখ খানের দুই হাত তুলে দোয়া করা আর সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে মুহূর্ত সময় লাগেনি। 'এটাই আমার দেশ' এই ক্যাপশন-সহ ছবিটা ছড়িয়ে পড়ে। অথচ সেই ছবি নিয়েই বিতর্কিত মন্তব্য করে করলেন এক বিজেপি নেতা। তাঁর অভিযোগ, লতা মঙ্গেশকরের শেষকৃত্যে শাহরুখ নাকি ‘থুথু’ ছিটিয়েছেন! হরিয়ানার রাজ্য বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অরুণ যাদব টুইট করে প্রকাশ্যেই প্রশ্ন তোলেন প্রার্থনার নামে লতা মঙ্গেশকরের শায়িত দেহে ‘থুতু ছেটাননি তো শাহরুখ?’ এই নিয়ে তোলপাড় হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। এই বিতর্কে এবার শাহরুখের পাশে দাঁড়ালেন অভিনেত্রী-রাজনীতিক উর্মিলা মাতন্ডকর।
রবিবার সকালে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে মৃত্যু হয় কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের। তারপর ওইদিনই শিবাজী পার্কে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়। তাঁর শেষকৃত্যে শিবাজী পার্কে হাজির ছিলেন প্রায় গোটা বলিউড। তবে অন্য ক্ষেত্রে তাঁর অসংখ্য গুণমুগ্ধ ভক্তরাও সেদিন সেখানে উপস্থিত হন।
এদিন লতার মরদেহের সামনে ধর্মীয় রীতি মনে ‘দোয়া’ করেন শাহরুখ। এরপর প্রার্থনার অঙ্গ হিসেবে মুখ থেকে মাস্ক নামিয়ে ফুঁ দিয়েছিলেন তিনি। তাতে কেউ কেউ ‘থুথু’ ছিটিয়েছেন বলে ভুল করেন। তা থেকেই বিতর্ক তৈরি হয়। অরুণ যাদব নিজের ভ্যারিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকেই বলিউড বাদশার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর সন্দেহ প্রকাশের ভিডিও ও টুইট বিদ্যুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে।
মুসলিম রীতি অনুসারে দোয়া করার পর ফুঁ দেওয়ার চল রয়েছে। বাদশা মাস্ক নামিয়ে মুখ নীচু করে ফুঁ দিয়ে সেই রীতিই পালন করেন। এর মাধ্যমে অশুভ আত্মা বা শয়তান বা জিনকে তাড়ানো হয়। তার প্রতীকী অর্থে এই ফুঁ ব্যবহার করা হয়।
প্রকৃত সত্যিটা স্মরণ করিয়ে কিং খানের পাশে দাঁড়িয়ে উর্মিলা বলেন, ‘আমাদের সমাজের কতটা অবক্ষয় হয়েছে! আজকাল প্রার্থনাকেও আমরা থুথু বলে ভুল করছি! এমন একজনকে নিয়ে এই অভিযোগ উঠছে, যিনি এতগুলো আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন! রাজনীতি কতটা নীচে নেমেছে! এসব দেখে দুঃখই হয়’।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন