করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সেই পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে মৃত্যু যে শুধু বয়স্কদেরই হচ্ছে, তা নয়। অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের মৃত্যুর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। একইসঙ্গে আছে চারিদিকে অক্সিজেন অভাব, হাসপাতালে বেড না পাওয়া নিয়ে হাহাকার। এই আকাল যে কতটা প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে, তা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এক মৃত্যু। চিকিৎসার অভাবে মাত্র ৩৫ বছরে মৃত্যু হল জনপ্রিয় ইউটিউবার রাহুল ভোরার। তিনি একজন অভিনেতা, থিয়েটার কর্মীও ছিলেন।
মৃত্যুর আগে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, সময় শেষ হয়ে এসেছে। টুইট করে ট্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। শেষ চেষ্টা করেন, যদি অক্সিজেন মিলে যায় আর প্রাণে বাঁচতে পারেন। ট্যাগ করেছিলেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়াকেও। উল্লেখ করেছিলেন হাসপাতালের নাম, নিজের বেড নম্বর। কিন্তু কোনও কিছুই কাজে এল না। এই পোস্ট করার কয়েক ঘণ্টা পরই মাত্র ৩৫-এই মৃত্যু হল তাঁর। অভিনেতার এ হেন মৃত্যু মানতে পারছেন না অনুরাগীরা। কোনও মানুষ কতটা যন্ত্রণা পেলে এভাবে নিজের মৃত্যুর কথা লিখতে পারেন, তা ভাবতেই শিউরে উঠছেন সবাই।
শনিবার বেলা ১২.৩৮ মিনিটে ফেসবুকে রাহুল লেখেন, 'যদি আমারও চিকিৎসা হত, তাহলে আমিও বেঁচে যেতাম।' পাশাপাশি রাহুল প্রধানমন্ত্রী ও দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করে লেখেন, তিনি দিল্লির রাজীব গান্ধী সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ৬৫৫৪ নম্বর বেডে ভর্তি আছেন। যদিও রবিবার সকালেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। নিজের পোস্টের শেষে রাহুল লিখেছিলেন, "খুব তাড়াতাড়ি আবার জন্মাব আর ভাল কাজ করব। এবার সাহস হারিয়ে ফেলেছি।"
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার যে পুরোপুরি ব্যর্থ, এক বছর সময়ে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর যে কোনও উন্নতি হয়নি, তা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই ঘটনা বলে দাবি নেটিজেনদের। অনেকেই ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নরেন্দ্র মোদি, অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ট্যাগ করে প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু এর শেষ কোথায়, তা জানা নেই।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন