কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা (N.C.B)-র প্রাক্তন অফিসার সমীর ওয়াংখেড়েকে বদলি করে চেন্নাই-এ পাঠানো হল। মুম্বাই ‘ড্রাগস-অন-ক্রুজ’ তদন্ত পরিচালনার ত্রুটি-বৈষম্য প্রকাশ্যে আসার পরই তা গভীরভাবে সমালোচিত হয়েছেন। এবার সেই তদন্ত অভিযানের নেতৃত্বে থাকা অফিসার সমীর ওয়াংখেড়েকে মুম্বাই থেকে চেন্নাইয়ের করদাতা পরিষেবার দপ্তরে (D.G.T.S) বদলি করে পাঠানো হয়েছে। কিংখান শাহরুখের ছেলে আরিয়ান খানকে গত শুক্রবার ক্লিন-চিট দিয়েছে NCB, এরপরই তদন্তের ত্রুটিগুলি প্রকাশ্যে এসেছে।
প্রসঙ্গত, গতবছর ২রা অক্টোবর কর্ডেলিয়া ক্রুজ নামের এক প্রমোদতরণীতে তিনদিনব্যাপী এক মিউজিক্যাল ট্যুর আয়োজন করা হয়েছিল। গোয়া-গামী সেই বিলাসবহুল তরণীতে প্রায় ১৫০০ জন যাত্রী ছিলেন। যাদের মধ্যে ছিলেন বলিউড, ফ্যাশন এবং বাণিজ্যজগতের বিশিষ্ট মানুষজন। সেখানেই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে NCB-র তরফে সমীর ওয়াংখেড়ে, তাঁর দল নিয়ে পৌঁছে যান সেই তরণীতে।
সেখান থেকে নিষিদ্ধ মাদক সেবনের অভিযোগে N.D.P.C আইনের ধারানুযায়ী (৮সি), ২০(বি), ২৭, ২৮, ২৯ এবং ৩৫ অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের করা হয়। আটক করা হয় শাহরুখ পুত্রসহ তাঁর ঘনিষ্ঠ ৮ জন বন্ধুকে। এরপর টানা ২৬ দিন জেল হেফাজতের পর, কিছু বিশেষ শর্তে জামিন পায় সে। তারপর, গত শুক্রবার (২৭শে মে) ক্লিনচিট দেওয়া হয় আরিয়ান খানকে। N.C.B স্পষ্ট জানায়, শাহরুখ খান পুত্রের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ নেই। এর জেরে স্বভাবতই প্রশ্নের মুখে পড়ে N.C.B-র গ্রহণযোগ্যতা এবং কর্মপদ্ধতি।
সূত্রের খবর, সমীর ওয়াংখেড়ে বর্তমানে ডিরেক্টর জেনারেল অফ অ্যানালিটিক্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট (D.G.A.R.M) মুম্বাইয়ের অফিসারের অতিরিক্ত কমিশনার হিসাবে দায়িত্বাধীন ছিলেন। এই দফতরও C.B.I.C-র অধীনে। এখানকার সরকারি কর্মকর্তারা গত শুক্রবার (২৭শে মে) বলেছেন, যে ভুয়ো কাস্ট সার্টিফিকেট জমা দিয়ে তপশীলি জাতির সংরক্ষিত আসনের অধীনে সিভিল সার্ভিস চাকরির ক্ষেত্রে দুর্নীতির জন্য ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মাদক চক্র অভিযানে সমীর ওয়াংখেড়ে দ্বারা পরিচালিত এই ‘ড্রাগস-অন-ক্রুজ’ তদন্তের কয়েকটি ভুলকে, ব্যাখ্যা করা হয়েছে। অনুসন্ধানের সময় কোনও ভিডিওগ্রাফি করা হয়নি, আরিয়ান খানের কাছে কোন মাদক দ্রব্য ছিল এমন প্রমাণ নেই, তাঁর ফোনের তথ্য বিশ্লেষণেও যথেষ্ট ত্রুটি ছিল। মাদক সেবন প্রমাণ করার জন্য কোনওরকম মেডিকেল পরীক্ষাও করা হয়নি এবং অভিযুক্তদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, একজন অভিযুক্তকে খালি কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় অর্থ-মন্ত্রক, সমীর ওয়াংখেড়ে NCB-তে থাকাকালীন মাদকের মামলায় অভিযুক্তদের সাথে অন্যায় করেছেন বলে উদ্ধৃত করেছে। এই ‘অন্যায় তদন্ত’ করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথাও উল্লেখ করেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন