দশকের পর দশক ধরে সিনেমার পর্দায় মিঠুন চক্রবর্তীর মারকাটারি সংলাপ বিনোদন যুগিয়েছে দর্শকদের। কিন্তু বাস্তব জীবনে রাজনৈতিক মঞ্চে মারকাটারি বক্তৃতা দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন প্রবীণ অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা। সম্প্রতি এক দলীয় সভায় ‘উস্কানিমূলিক’ মন্তব্যের জন্য মিঠুনের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে এফআইআর।
সম্প্রতি বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানের সূচনা করতে কলকাতায় এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। ২৭ অক্টোবরের সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীও। সেই সভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ূন কবীরের একটি পুরানো বক্তব্য টেনে মিঠুন বলেন, ‘আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনেই বলছি, যা করতে হয় সব করব। এই সব কিছুর মধ্যে অনেক অর্থ লুকিয়ে রয়েছে। আমাদের এখানকার এক নেতা বলেছেন, ৭০ শতাংশ মুসলিম, ৩০ শতাংশ হিন্দু। কেটে ভাগীরথীতে ভাসিয়ে দেব। ভাবলাম, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কিছু বলবেন। কিন্তু কিছু হল না। আমি মুখ্যমন্ত্রী নই। কিন্তু বলে রাখছি, ভাগীরথী নদী আমাদের মা। তাই ভাগীরথীতে কেটে ভাসিয়ে দেব না। কিন্তু তোমার মাটিতেই তোমাকে পুঁতে দেব।’
শুধু তাই নয়। সেদিনের সভা মঞ্চ থেকে মিঠুন আরও বলেন, ‘আমাদের এমন সদস্য চাই, যাঁরা বুক চিতিয়ে বলবেন, মার। কত গুলি আছে দেখি। এমন কর্মী চাই না, যাঁরা টাকা নিয়ে কাজ করেন। এমন করলে আপনারা তৃণমূলে চলে যান। আমি বলে যাচ্ছি, আপনারা আমাদের বাগানের একটা ফল যদি ছেঁড়েন, আমরা চারটে ছিঁড়ব। এটা সত্যি। নইলে জিততে পারব না।’ ভোটারদের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম সংক্রান্ত মন্তব্য করে প্রবীণ অভিনেতা বলেছিলেন, ‘এটা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী বলছে না। ১৯৬৮ সালের ২৮ বছর বয়সি মিঠুন বলছে। রাজনীতি করেছি। রক্তের রাজনীতি করেছি। সব জানি, কে কোথা থেকে কী করবে। আপনাদের পাশে চাই। সাহস চাই। বুক চিতিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।‘
লালবাজার সূত্রে খবর, এই উস্কানিমূলক মন্তব্যের পরেই সোমবার বৌবাজারে মিঠুনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। যেখানে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপির একটি সভায় ‘উস্কানিমূলক’ মন্তব্য করেছেন মিঠুন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। নিরাপত্তার স্বার্থে অভিযোগকারীর নাম গোপন রাখা হয়েছে। বৌবাজার থানা সূত্রে, মিঠুনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার নম্বর ২৫৫। তবে অভিযোগ দায়ের হলেও মিঠুনের বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করবে কিনা, তা এখনও ঠিক হয়নি বলেই জানা যাচ্ছে লালবাজার সূত্রে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন