"...ঢেউ উঠেছে কারা টুটেছ।।
আলো ফুটেছে প্রাণ জাগছে জাগছে জাগছে..." -
১৯৪৬ সালে নৌবিদ্রোহের সমর্থনে হরতালের দিন যে গান রচিত হয়েছিল, তা আজও মাঠ-পাথার-প্রান্তরে প্রতিধ্বনিত হয় খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার বুঝে নেওয়ার লড়াইয়ে। গানটির রচয়িতা কিংবদন্তী শিল্পী সলিল চৌধুরী। যিনি একাধারে ছিলেন গীতিকার এবং সুরকার। ২০২৫ সালের ১৯ নভেম্বর সলিল চৌধুরীর জন্ম শতবর্ষ। সেই উপলক্ষ্যে এখন থেকেই একাধিক উদ্যোগ নিতে চলেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যগণ এবং রাজ্যের বিশিষ্ট শিল্পীরা।
মঙ্গলবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক জগতের বিশিষ্টজনেরা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত পরিচালক কল্যাণ সেন বরাট এবং তপারতি গঙ্গোপাধ্যায়। ওই অনুষ্ঠানে সলিল চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা এবং রাজ্যের বিশিষ্ট শিল্পীরা একত্রে গঠন করেন 'সলিল জন্মোৎসব কমিটি'। কমিটির তরফে প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর দিনটি 'সলিল দিবস' হিসেবে পালন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কমিটির চেয়ারপার্সন হয়েছেন সলিল চৌধুরীর কন্যা অন্তরা চৌধুরী। কিংবদন্তী শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আসন্ন জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচীর কথা উল্লেখ করেছেন অন্তরা। তাঁর কথায়, সলিল চৌধুরীর গান ও দর্শন আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সলিল চৌধুরীর সাথে কাজ করেছেন এমন যেসব শিল্পীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরা হল :-
⦁ সঙ্গীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লা - সলিলদার সাথে গান গাওয়ার সুযোগ আমার হয়েছে। তিনি খুব ভালো কথক ছিলেন। গভীরে গিয়ে উপলব্ধির কথা বলতেন।
⦁ সঙ্গীতশিল্পী শ্রীকান্ত আচার্য - তিনি (সলিল চৌধুরী) সঙ্গীতচর্চা এবং জীবনচর্চার মধ্যে সকলকে যুক্ত করতে চাইতেন।
⦁ গণসঙ্গীত শিল্পী কঙ্কন ভট্টাচার্য - বাংলার এমনকি সারা দেশের বিরাট সংখ্যক মানুষের হৃদস্পন্দন ছিল সলিল চৌধুরীর গান। এমন একটিও গান নেই, যেখানে জীবন নেই। সেই সঙ্গে নতুন রাস্তা খোঁজার সন্ধান রয়েছে তাঁর গানে।
⦁ বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার - সলিলদার সঙ্গে প্রথম কাজ করি দক্ষিণ ভারতে। সেখানেও দেখেছি, শিল্পীদের মধ্যে তিনি খুব জনপ্রিয়।
⦁ গীতিকার এবং সুরকার কাজী কামাল নাসের - নিজ দক্ষতায় তিনি ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান। সঙ্গীতশিল্পীদের একবার সেখানে যেতেই হবে।
উল্লেখ্য, আগামী তিন বছরব্যাপী জেলাভিত্তিক সলিল চৌধুরীর গানের বিভিন্ন অনুষ্ঠান, কর্মশালা, প্রতিযোগিতা, আলোচনাসভা এবং নাটকের আয়োজন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ছোটরা যাতে এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হবে। ছোটদের জন্য সলিল চৌধুরীর লেখা নাটক, কবিতা, ছড়া নিয়েও কাজ করা হবে। জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে মূল অনুষ্ঠানটি হবে আগামী ১৯ নভেম্বর, ২০২৫-এ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন