‘কারার ওই লৌহ-কপাট’ বিতর্কে অবশেষে মুখ খুললেন ‘পিপ্পা’ ছবির নির্মাতারা। গত কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তৈরি ‘পিপ্পা’ ছবিতে ব্যবহৃত কাজী নজরুল ইসলামের দেশাত্মবোধক গান ‘কারার ওই লৌহ-কপাট’-এর সুর নিয়ে চরম বিতর্ক শুরু হয়েছে। বাঙালির কাছে ‘রক্ত গরম করা’ ওই গানে অস্কারজয়ী সুরকার এআর রহমানের ‘মস্তিস্কপ্রসূত’ সুর একেবারেই মেনে নেয়নি বঙ্গবাসী। সেই বিতর্ক শান্ত করতেই এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষমা চাইল ছবির নির্মাতা সংস্থা ‘রয় কাপুর ফিল্মস’।
গত সপ্তাহেই মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট নিয়ে তৈরি ছবি ‘পিপ্পা’। তবে ছবিতে ব্যবহৃত দেশাত্মবোধক গান ‘কারার ওই লৌহ-কপাট’ গানটি একেবারেই মেনে নিতে পারেননি দেশের দর্শকরা। গানটির মূল সুরের বদলে সুরকার এ আর রহমানের পরিবর্তিত সুর নিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়েছে বাঙালিদের মধ্যে। সুর ‘বিকৃত’ করার অভিযোগ করে রহমানকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলোধোনা করেছেন বাঙালিরা। বাংলার সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবাদের রেশ ছড়িয়েছে বাংলাদেশেও। রহমানের নামে ‘ছিঃ ছিঃ’ রব উঠেছে সমাজমাধ্যমের আনাচেকানাচে।
এই বিতর্কের মধ্যেই এবার নীরবতা ভাঙলেন ছবির নির্মাতারা। ইনস্টাগ্রামে বিশাল এক বিবৃতি পোস্ট করে আপামর জনতার কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে ছবির পরিচালক, প্রযোজক ও সুরকারের তরফে।
তবে যার সুর নিয়ে এত বিতর্ক, সেই রহমান এখনও এই বিতর্কে মুখ খোলেননি। সোমবার বিবৃতি প্রকাশ করে ছবির নির্মাতা সংস্থা ‘রয় কাপুর ফিল্মস’ জানিয়েছে, “সাধারণ মানুষ ও দর্শকদের ভাবাবেগ আমরা বুঝতে পেরেছি। তারা হয়তো আসল গানটির সঙ্গে একাত্মতা বোধ করেন। আমাদের গান যদি কাউকে কষ্ট দেয় বা ভাবাবেগে আঘাত করে, তার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।”
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, “ছবিতে ব্যবহৃত ‘কারার ওই লৌহ-কপাট’ গান নিয়ে দেশজুড়ে সমালচনার মধ্যে ছবির পরিচালক, প্রযোজক ও সুরকারের তরফে জানাতে চাই, গানটি নিয়ে আমাদের উপস্থাপনা একেবারেই একটি শৈল্পিক প্রচেষ্টা মাত্র।” নির্মাতাদের দাবি, “কাজী নজরুল ইসলামের পরিবারের থেকে যাবতীয় নিয়ম মেনে এই গানের স্বত্ব নেওয়া হয়েছিল। স্বত্ব নেওয়ার পরেই গানটি নিয়ে আমরা কাজ শুরু করি।”
নির্মাতারা আরও জানিয়েছেন, “কাজী নজরুল ইসলাম ও তার গানের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। শুধু গানই নয়, ভারতের সামাজিক, রাজনৈতিক ও সঙ্গীত জগতে নজরুল ইসলামের অবদান অনস্বীকার্য।” তবে যে রহমানের সুর নিয়ে এত কাণ্ড, সেই রহমান ব্যক্তিগতভাবে এখনও ‘নীরব’। এখনও পর্যন্ত তার তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে প্রতিবাদী বাঙালিরা এখনও গানটিকে ‘বিকৃত’ করা নিয়ে রহমানের ‘স্পর্ধা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন