আর জি কর হাসপাতালে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়া বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক অপর্ণা সেন-এর পাশে দাঁড়ালেন অঞ্জন দত্ত। বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক পোষ্টে প্রখ্যাত এই অভিনেতা ও পরিচালক লেখেন “আপনি যে অপমানের মুখোমুখি হয়েছেন তা শুনে আমি লজ্জিত।” গত ১৩ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালে অবস্থানরত চিকিৎসকদের সংহতি জানাতে সেখানে গেছিলেন অপর্ণা সেন। তখনই গেটের বাইরে তাঁকে বিক্ষোভরত জনতা ‘চটিচাটা বুদ্ধিজীবী’ বলে সম্বোধন করেন।
নিজের ফেসবুক পোষ্টে অঞ্জন দত্ত লিখেছেন, “অপর্ণা সেন R G Kar-এ প্রতিবাদ করার সময় আপনি যে অপমানের মুখোমুখি হয়েছেন তা শুনে আমি অত্যন্ত লজ্জিত এবং আমাদের কিছু সহকর্মীকে আপনাকে কটূক্তি করার পোষ্টগুলি আনন্দের সাথে শেয়ার এবং লাইক করতে দেখে সমানভাবে আতঙ্কিত হয়েছি।”
তিনি আরও লেখেন, “যখন অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যায়, তখন তারা বুদ্ধিমান এবং সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অপমান করে, বিশেষ করে তাঁদের, যারা কোনো দলের লাইন মেনে চলেন না। আমি কখনোই আমার কাজের বাইরে গিয়ে খুব সোচ্চার হইনি। এটা আমার স্বভাবের মধ্যে নেই। আপনার আছে. তাই আমি আপনাকে স্যালুট জানাই। মাথা উঁচু করে রাখুন। এই শহরে যথেষ্ট সংবেদনশীল, বুদ্ধিমান, সৎ মানুষ আছেন, যারা আপনার প্রতিবাদী চরিত্রের সঙ্গে সহমত পোষণ। এইরকম অন্ধকার সময় আপনার মত কন্ঠস্বরের প্রয়োজন।
বর্ষীয়ান অভিনেতা আরও লেখেন, আমি আপনাকে চিনতে পেরে খুব গর্বিত বোধ করছি, গত কয়েক দশক ধরে আপনাকে সঠিক প্রতিবাদীর ভূমিকায় আপনাকে দাঁড়াতে দেখেছি। আপনার জন্য আমি গর্বিত। আপনার প্রতিবাদ এমন অসংখ্য মহিলার কাছে গুরুত্বপূর্ণ যারা এই ব্যবস্থায় ভুক্তভোগী। আপনার কণ্ঠস্বর এমন অসংখ্য মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, যারা দুর্নীতি এবং ন্যায়বিচারের অভাবের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি জানি আপনার জন্য একটি ব্যক্তিগত ফোন কলই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু আমার এটি প্রকাশ্যে লেখা উচিত। আমরা যে চলচ্চিত্র তৈরি করি বা আমরা যে কাজ করি তার সাথে এর কোনও সম্পর্ক নেই।”
মঙ্গলবার বিকাল ৪ টেয় শ্যামবাজার থেকে আর জি কর পর্যন্ত এই পদযাত্রা হয়। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে পদযাত্রায় অংশ নিতে পারেননি অপর্ণা সেন। তিনি সরাসরি নিজের গাড়ি করেই উপস্থিত হন আরজি করের সামনে। সেখানে পৌঁছানো মাত্রই তাঁকে দেখে ‘চটিচাটা বুদ্ধিজীবীরা দূর হটো’ স্লোগান ওঠে। যদিও এই নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। সোজা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে তিনি ভিতরে ঢুকে যান। গেটের সামনে বিক্ষোভকারীদের আটকে দেয় পুলিশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন