চলতি বছর সেপ্টেম্বরের শেষেই মুক্তি পেয়েছে মণি রত্নম পরিচালিত 'পোন্নিয়িন সেলভান ১'। ঐশ্বর্য রাই বচ্চন ও বিক্রম অভিনীত ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পরই একদিকে যেমন দর্শকদের মন কেড়েছে, অন্যদিকে ছবিটি ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। রাজ রাজ চোলকে হিন্দু বলে দাবি করায় বিজেপির বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তুলেছেন দক্ষিণীরা। প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন দক্ষিণী অভিনেতা তথা রাজনীতিবিদ কমল হাসান।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় পুরষ্কারজয়ী তামিল পরিচালক ভেত্রিমারানের স্পষ্ট দাবি, রাজ রাজ চোল হিন্দু রাজা ছিলেন না। ভারতের বুকে ব্রিটিশ আধিপত্য বিস্তারলাভ করার পর 'হিন্দু' শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। খ্রিষ্টীয় আট শতকের একজন শাসককে হিন্দু বলা আদতে যুক্তিযুক্ত? তাঁর এই প্রশ্ন ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ভেত্রিমারানের কথায়, আমাদের প্রতীকগুলি ক্রমাগত আমাদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ভল্লুভারকে গেরুয়াকরণ করা অথবা রাজ রাজ চোলকে হিন্দু রাজা হিসেবে দেখানো, সবই আসলে সাধারণ মানুষের মন থেকে আসল সত্যিটাকে মুছে ফেলার চেষ্টা। এর ফলে আরও বেশি বিভ্রান্ত হচ্ছে জনসাধারণ।
পরিচালক ভেত্রিমারানের বক্তব্যকে পূর্ণ সমর্থন করেন কমল হাসান। বিজেপি নেতার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, সত্যিই তো! রাজ রাজ চোলের আমলে 'হিন্দু ধর্ম' বলে কোনও কিছুর অস্তিত্ব ছিল না। বইনবম, শিবম এবং সমনাম নামের তিনটি গোষ্ঠীর কথা জানা যায়। পরবর্তীকালে ব্রিটিশরা তাঁদের এক ছাতার তলায় এনে 'হিন্দু' বলে চিহ্নিত করেছিলেন। তাঁরা আসলে জানতেনই না কোন শব্দের উচ্চারণ কী! উদাহরণস্বরূপ, থুথিকুণ্ডিকে ব্রিটিশরা বলতেন তুতিকোরিণ, এটাও তেমনই একপ্রকার স্বরবিকৃতি।
'পোন্নিয়িন সেলভান' দেখার পর কমলের দাবি, ইতিহাস বিকৃত না করে এবং গল্পের গোরুকে গাছে না তুলে অথবা অহেতুক ভাষা বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করে ছবি তৈরী করাই ভালো। তাতে যা হবে, সেটাই বাস্তবের কাছাকাছি থাকবে।
তামিল পরিচালকের মন্তব্যের জেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তামিলনাড়ুর বিজেপি নেতা এইচ রাজা। তাঁর কথায়, ভেত্রিমারানের মতো ইতিহাসে দক্ষতা নেই আমার। তবে, রাজ রাজের তৈরী দুটি চার্চ এবং দুটি মন্দিরের কথা আমি বলতে পারি। রাজ রাজ নিজেকে শিবপদ সেকারণ বলে পরিচয় দিতেন। এরপরও বলবেন তিনি হিন্দু নন? তাহলে তিনি ঠিক কী?
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন