সারোগেসির মাধ্যমে মাতৃত্ব নিয়ে অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে নিশানা করলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তিনি এই ইস্যুতে টুইট করেছেন। তার জেরে আপাতত সরগরম নেটদুনিয়া। তাঁর এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন নেটিজেনরা। কে, কীভাবে মাতৃত্ব ভোগ করবেন, উপভোগ করবেন, সন্তানের জন্ম দেবেন, সেসব তাঁদের একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। সেখানে কারও মাথা গলানো উচিত নয়, এমনটাই মত অধিকাংশ নাগরিকের।
অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও স্বামী নিক জোনাস শুক্রবার মধ্যরাতে তাঁদের প্রথম সন্তানকে (মেয়ে) স্বাগত জানিয়েছেন। সারোগেসির মাধ্যমে সন্তানের জন্ম হয়েছে, সেটাও তাঁরা জানিয়েছেন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই ইস্যুতে তসলিমা টুইট করেছেন, 'গরিব মহিলারা আছেন বলেই সারোগেসি সম্ভব। ধনীরা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সবসময়েই চান সমাজে দারিদ্র থাকুক। কেউ সত্যিই সন্তান চাইলে গৃহহীন শিশুকে দত্তক নিন। উত্তরাধিকারসূত্রে সন্তানকে বাবা-মায়ের বৈশিষ্ট্য পেতেই হবে, এটা শুধুই স্বার্থপর নার্সিসিস্টিক অহঙ্কার।'
লেখিকার প্রশ্ন, 'রেডিমেড সন্তান হাতে এলে, মাতৃত্বের উষ্ণতার দিয়ে কীভাবে একজন মা সেই সন্তানকে প্রতিপালন করবেন? যে মা গর্ভে ধারণ করে সন্তানকে জন্ম দিলেন, তাঁর মতো অনুভূতি বাচ্চাটিকে যিনি পরবর্তীতে মানুষ করবেন তাঁর ক্ষেত্রে থাকবে?'
লেখিকার এহেন মন্তব্যের পর নানা মহলে শুরু হয়েছে নানা কথা। কেউ কেউ অবশ্য তাঁর মন্তব্যকে সমর্থন করেছেন। তবে অনেকেই এই মন্তব্যকে অনুভূতিহীন বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁদের দাবি, সারোগেসির মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দেওয়া বা সন্তান দত্তক নেওয়া দম্পতি বা মহিলা বা কোনও ব্যক্তির ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেখানে অন্য কেউ মন্তব্য করতে পারে না। অনেকেই আবার সারোগেট মায়েদের স্বাস্থ্য নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, শাহরুখ খান, আমির খান-সহ অনেক বলিউড তারকাই সারোগেসির মাধ্যমে সন্তানলাভ করেছেন। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও নিক জোনাস।
কী এই সারোগেসি? ট্র্যাডিশনাল সারোগেসি ও জেস্টেশনাল সারোগেসি- এই দু'ধরনের হয়। ট্র্যাডিশনাল সারোগেসি: সারোগেট মা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে সন্তানের বাবার স্পার্ম নিয়ে গর্ভে সন্তান ধারণ করেন। একসময় সন্তানের জন্ম দেন। তার পর নবজাতকের বাকি দায়িত্ব থাকে আইনি বাবা-মায়ের। সারোগেট মা-ই শিশুর বায়োলজিক্যাল মাদার।
জেস্টেশনাল সারোগেসি: কোনও এক দম্পতির ডিম্বাণু ও শুক্রাণুকে নিষিক্ত করে ভ্রূণটিকে জেস্টেশনাল সারোগেট মাদারের ইউটেরাসে প্রবেশ করানো হয়। তিনি সন্তান ধারণ করলেও এই পদ্ধতিতে সারোগেট মাদারের সঙ্গে ভূমিষ্ঠ সন্তানের বায়োলজিক্যাল সম্পর্ক থাকে না। ওই দম্পতিই শিশুটির আইনি বাবা-মা এবং সব দায়িত্ব তাঁদের উপরেই থাকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন