নির্বিচারে হামলা চলছে, কী নির্মম-নৃশংস! বাংলাদেশে ছাত্রদের উপর পুলিশি হামলার নিন্দায় সরব শিল্পীরা

People's Reporter: বাংলাদেশের অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী তিনি বলেন, "ছাত্র-ছাত্রীরা কীইবা করেছিল? কোটা সংস্কারের দাবি তুলেছিল। তা–ই তো? একটি গণতান্ত্রিক দেশে স্বাধিকারের দাবি যে কেউ তুলতে পারে।"
বাংলাদেশে কোটা বিরোধী আন্দোলন
বাংলাদেশে কোটা বিরোধী আন্দোলনফাইল ছবি
Published on

কোটা বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল বাংলাদেশ। পুলিশের সাথে সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ৩২ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। ছাত্রদের আন্দোলনে পুলিশের এই সহিংসতা নিয়ে সরব হয়েছেন অনেকেই। সেই তালিকায় এপার বাংলা ওপার বাংলার অনেক শিল্পীই রয়েছেন। সকলের প্রার্থনা বাংলাদেশ দ্রুত শান্ত হোক।

আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সঈদের একটি (আঁকা ছবি) ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে টলিউড অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি লিখেছেন, “অস্থির লাগছে, আমিও তো সন্তানের জননী। আশা করবো বাংলাদেশ শান্ত হবে।“

এই মুহূর্তে আমেরিকায় রয়েছেন অভিনেত্রী। সেখান থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, “একটা ভিডিও দেখলাম, গুলির ধোঁয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আক্রান্ত। ছাত্র বয়স গেছে সেই কবে, তবে জাহাঙ্গীরনগর (বিশ্ববিদ্যালয়) আর আমার যাদবপুর (বিশ্ববিদ্যালয়) খুব কাছাকাছি। কাঠগোলাপের গাছগুলিও কেমন এক রকম। এক রকম আকাশের মেঘগুলিও। কেবল আজ ওখানে বারুদের গন্ধ।“

পোস্টের শেষে সকলের ভালো প্রার্থনা করে রবীন্দ্রনাথের গানের একটি লাইন লিখেছেন তিনি। তিনি লেখেন, “অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো, সেই আমাদের আলো… আলো হোক। সকলের ভালো হোক।“

গায়ক কবীর সুমনও বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নিজের ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘...বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় চুপ করে বসে থাকতে পারি না। থেকেছি কয়েক দিন। আর পারছি না। কিন্তু অবস্থাটা যে ঠিক কী, কী কী কারণে এমন হলো এবং হচ্ছে, কারা যে এতে জড়িত, তা–ও তো ঠিকমতো জানি না। তা–ও করজোড়ে সব পক্ষকে মিনতি করছি, অনুগ্রহ করে হিংসা, হানাহানি বন্ধ করুন। ঢাকা সরকারকে অনুরোধ করছি, বাংলা ভাষার কসম, শান্তি রক্ষার চেষ্টা অব্যাহত রাখুন। আপনাদের ছাত্রবাহিনী যেন হিংসার আশ্রয় না নেয়।’  

তিনি আরও বলেন, “আমি তো সশরীরে যেতে পারছি না ঢাকায়। পারলে যেতাম। রাস্তায় বসে পড়ে সকলকে শান্তিরক্ষার জন্য আহ্বান করতাম।“

আন্দোলনকারীদের উপর হামলা নিয়ে সরব হয়েছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। মহিলা শিক্ষার্থীদের উপরেও হামলা চালিয়েছে পুলিশ। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, "একজন নয়, দুজন নয়, আমার অসংখ্য বোনের ওপর নির্বিকার ভঙ্গিতে হামলা চালানো হচ্ছে, রক্তাক্ত করা হচ্ছে। কী নির্মম, কী নৃশংস!"

তিনি লেখেন, "ছাত্র-ছাত্রীরা কীইবা করেছিল? তারা তাদের অধিকারের ব্যাপারে সোচ্চার হয়েছিল। কোটা সংস্কারের দাবি তুলেছিল। তা–ই তো? একটি গণতান্ত্রিক দেশে স্বাধিকারের দাবি যে কেউ তুলতে পারে। কিন্তু তা–ই বলে নারীর গায়ে হাত তোলা! আবু সাঈদের মতো সম্ভাবনাময় তরুণকে হত্যা করা, এসব কি সভ্যতার পর্যায়ে পড়ে? সমাধানের অন্য কোনো উপায় কি ছিল না? গুলি কেন করতে হলো?"

এই নিয়ে সরব হয়েছেন ক্রিকেটাররাও। ক্রিকেটার লিটন দাস লেখেন, "কোথাও কোন রক্তপাত, কোন মৃত্যুই কেউ চায় না। দেশের তরুণরাই আগামীর ভবিষ্যৎ। তাই আর কোন ভাইবোনদের উপর সহিংসতা দেখতে চাই না। চলমান সংকটের যৌক্তিকভাবে সমাধান হোক। দেশটা আমাদের সবার।"

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in