ফের ‘আদিপুরুষ’-এর নির্মাতাদের খুল্লামখুল্লা আক্রমণ করলেন অভিনেতা মুকেশ খান্না। দেশের ১০০ কোটি হিন্দুদের জেগে ওঠার বার্তা দিয়ে তিনি এক সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আদিপুরুষের গোটা দলকে ৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা উচিত।”
কয়েকদিন আগেই ওই ছবিতে ‘লঙ্কাধিপতি রাবণ’-এর ভূমিকায় সইফ আলি খানকে বেছে নেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন মুকেশ। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, “রাবণের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য সইফ আলি খান ছাড়া আর কোনও অভিনেতা কি ছিল না বলিউডে?”
বুধবার এক সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে 'শক্তিমান' খ্যাত অভিনেতা মুকেশ খান্না বলেন, “ওই ছবির নির্মাতাদের ক্ষমা করা উচিত নয়। গতকালই আমি আমার চ্যানেলে বলেছি, আদিপুরুষ ছবির গোটা দলকে ৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় জ্যান্ত পুড়িয়ে দেওয়া উচিত।” তিনি আরও জানিয়েছেন, “আমি শুনেছিলাম মনোজ মুন্তাশির নাকি অনেক বড় লেখক! আমি ওকে কখনও সেভাবে ফলো করিনি কিন্তু এখন ওঁর বাচ্চাদের মতো অজুহাত দেওয়া দেখে খারাপ লাগছে। আমার মনে হয়েছিল, এত বিতর্কের পর যখন সারা দেশ একসঙ্গে প্রতিবাদ করবে তখন উনি মুখ লুকাবেন। কিন্তু তার বদলে উনি কখনও বলছেন এটা বাল্মীকির সংস্করণ, কখনও বলছেন এটা তুলসীদাসের সংস্করণ, কখনও বলছেন এটা রামানন্দ সাগরের সংস্করণ। আবার কখনও বলছেন এটা ওঁর নিজের সংস্করণ। আরে ভাই কে আপনি? আপনি কি বাল্মীকির থেকে বড় যে বাচ্চাদের বলবেন সব ভুলে যাও, আমি যা বলছি সেটাই সত্যি?” প্রসঙ্গত, ‘আদিপুরুষ’ ছবির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেছেন মনোজ মুন্তাশির।
অভিনেতার আরও বক্তব্য, “হনুমান আর রামকে আপনারা চামড়ার কাপড় পরিয়ে দিয়েছেন! আর রাম, কৃষ্ণ, বিষ্ণু কারওরই গোঁফ ছিল না। আমরা তাঁদের দেখে বড় হয়েছি।”
ভারতের হেভিওয়েট মিউজিক প্রযোজনা সংস্থা ‘টি-সিরিজ’-এর কর্ণধার ভূষণ কুমারের প্রতিও তিনি তাঁর ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। ‘আদিপুরুষ’ ছবির সহ-প্রযোজক ভূষণ কুমারকে নিয়ে মুকেশ খান্না জানিয়েছেন, “আপনারা সবাই জানেন টি-সিরিজের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন। উনি ভারতে রাম-সহ সমস্ত দেব-দেবীর ভজন এতটাই জনপ্রিয় করে দিয়েছিলেন যে একসময় দেশে শুধু ওটাই বিক্রি হতো। আর তাঁর ছেলে হয়ে আপনি এই রামায়ন দেখাতে চান? আপনি পিতার নাম উজ্জ্বল করছেন না তাঁর নাম খারাপ করছেন?”
অন্যদিকে, ‘আদিপুরুষ’ নিয়ে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংও। ছত্রিশগড় সফরে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছেন, “আদিপুরুষ ছবিটি দেখে প্রচণ্ড মর্মাহত হয়েছি। হিন্দু দেব-দেবীর মুখ দিয়ে যা ইচ্ছে বলিয়ে নেওয়াটা এখন দেশে ফ্যাশন হয়ে গিয়েছে। অন্য কোনও ধর্মে এরকম কিছু করার সাহস আছে কারও? না নেই। আমাদের দেশে এখন যখনই কারও কটূক্তি করতে হয় তখনই হয় পিকে বানিয়ে নেয়, নাহলে সিকে বানিয়ে নেয়। বর্তমানে সনাতন ধর্মকে যেভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে সেটা ধীরে ধীরে সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন