গোয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ৫৩ তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (IFFI)। সেই খ্যাতিসম্পন্ন মঞ্চেই এবার জুরি চেয়ারম্যানের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' সিনেমাটিকে। সব মিলিয়ে সিনেমাটি ঘিরে বিতর্ক যেন আর পিছু ছাড়ছে না।
নব্বইয়ের দশকে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হত্যার প্রসঙ্গে নির্মিত সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে চলতি বছরের মার্চে। তারপর থেকে সারা দেশজুড়ে উঠেছে বিতর্কের ঝড়। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে IFFI জুরির প্রধান ইসরায়েলি চলচ্চিত্র নির্মাতা নাদাভ ল্যাপিড কাশ্মীর ফাইলস প্রসঙ্গে বলেন, ছবিটি অত্যন্ত 'অশ্লীল' এবং 'একপেশে'। তাঁরা সকলেই চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত ছবিটি দেখে 'বিরক্ত এবং হতবাক'।
মি: ল্যাপিডের কথায়, "এই ধরণের ছবি দেখে আমরা হতবাক। ঐতিহ্যবাহী এই চলচ্চিত্র উৎসবে শৈল্পিক ভাবনাটাই আসল। সেখানে এই ধরণের ছবির কোনও স্থান নেই। অন্যান্য ছবির সাথে প্রতিযোগিতা করার জন্য এই ছবিটি অনুপযুক্ত। আমি এই মঞ্চে আপনাদের সাথে খোলামেলাভাবে নিজের অনুভূতিগুলো স্বচ্ছন্দে ভাগ করে নিতে চাই। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে উপস্থিত সকলের এই চেতনা থাকা উচিত, শিল্প এবং জীবনের স্বার্থে গঠনমূলক সমালোচনা অপরিহার্য।"
অনুপম খের, মিঠুন চক্রবর্তী, দর্শন কুমার, পল্লবী যোশী অভিনীত 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' ছবিটি গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের 'প্যানোরমা' বিভাগে প্রদর্শিত হয়েছে।
ছবিটি মুক্তির পরই ব্যাপকভাবে প্রশংসা করেছিল দেশের শাসন ক্ষমতায় থাকা বিজেপি সরকার। শুধু তাই নয়, বেশিরভাগ বিজেপি শাসিত রাজ্যে ছবিটিকে করমুক্ত ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সিনেমাটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
অন্যদিকে, ছবিটির মূল বিষয়বস্তুকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়া সহ বিভিন্ন মাধ্যমে উঠেছে তীব্র নিন্দার ঝড়। কেউ কেউ ছবিটিকে একতরফা চিত্রনাট্য বলেও কটাক্ষ করেছে। আবার কেউ কেউ তীব্র ঘৃণা উগরে বলেছেন অসত্য প্রচার করে দেশের মানুষকে বিভ্রান্তির পথে ঠেলে দিচ্ছে বিজেপি।
চলতি বছরের মে মাসে সিনেমাটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সিঙ্গাপুর। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-র কাছে এক বিবৃতির মাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করে সিঙ্গাপুর সরকার জানায়, বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত এই ছবিটি 'বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা তৈরীর কারণ' হতে পারে। কাশ্মীরের চলমান সংঘাত এবং মুসলমানদের দ্বারা হিন্দু পণ্ডিতদের নির্যাতিত হওয়ার যে একপেশে চিত্রায়ন করা হয়েছে, সেই কারণে ছবিটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন