ভারতে প্রতি বছর প্রায় ২ লক্ষ শিশু হৃদরোগ নিয়েই জন্মগ্রহণ করে। বুধবার International Congenital Heart Disease Day-তে এই প্রসঙ্গে মতামত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কনজেনিটাল হার্ট ডিফেক্টস (CHDs) হল হৃদযন্ত্র বা হৃৎপিণ্ডের গঠনগত ত্রুটি যা জন্ম থেকেই বিদ্যমান। এক্ষেত্রে নানা রকমের ত্রুটি থাকতে পারে। যেমন, হৃৎপিণ্ডে ছিদ্র থাকতে পারে আবার ভালভ বা কপাটিকার গঠনে সমস্যা থাকতে পারে। অনেকসময় রক্তজালির বিন্যাসে ত্রুটির কারণে হৃদপেশীতে রক্তপ্রবাহের ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়।
ডাঃ সঞ্জীব কুমার গুপ্ত, দিল্লির সিকে বিড়লা হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট, আইএএনএসকে এই প্রসঙ্গে বলেন, “সিএইচডি একটি গঠনগত অস্বাভাবিকতা যা জন্মের সময় থেকেই লক্ষ্য করা যায়। বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষ এর শিকার এবং ভারতে এর হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। বছরে আনুমানিক ২ লক্ষ শিশু সিএইচডি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, এটি দেশের সবচেয়ে সাধারণ জন্মগত ত্রুটি।“
সাধারণ সিএইচডিগুলি হল অ্যাট্রিয়াল সেপ্টাল ডিফেক্ট (এএসডি), ভেন্ট্রিকুলার সেপ্টাল ডিফেক্ট (ভিএসডি), এবং পেটেন্ট ডাক্টাস আর্টেরিওসাস (পিডিএ)। পারস হেলথ গুরুগ্রামের পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি দীপক ঠাকুর বলেন, “হৃদরোগের এই সমস্যার ফলে হার্টে এবং ফুসফুসে অস্বাভাবিক রক্ত প্রবাহ হয়। নবজাতকের মধ্যে যে লক্ষণগুলি দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, কম ওজন বৃদ্ধি, ত্বকে নীলচে ভাব এবং বারবার বুকে ব্যাথা।“
দীপক ঠাকুর জানিয়েছেন, “কখনও কখনও শিশুরা সম্পূর্ণরূপে উপসর্গবিহীন হয়। রুট কার্ডিয়াক মূল্যায়নের সময় সমস্যা বোঝা যায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে উপসর্গগুলি পরিস্ফুট হয়।“
এই ব্যাপারে সাকেতের ম্যাক্স সুপার স্পেশালিটি হসপিটালের পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি বিভাগের ডিরেক্টর ডাঃ মুনেশ তোমর আইএএনএসকে বলেছেন, প্রতি ১০০ জনের মধ্যে একজন শিশু CHD নিয়ে জন্মায় এবং এটি সমস্ত জন্মগত অসঙ্গতির প্রায় এক-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী।
"পারিবারিক ইতিহাস বিশেষ করে মা অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন কোনও সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত হলে, বা গর্ভাবস্থায় মায়ের নেওয়া কোনও ওষুধের সাইড এফেক্ট থেকেও শিশুরা সিএইচডি-তে আক্রান্ত হতে পারে,” বলেছেন ডাঃ তোমার।
“অভিভাবকদের আতঙ্কিত হওয়া উচিত না। সিএইচডি চিকিত্সাযোগ্য। এই অবস্থার শিশুরা সঠিক যত্ন এবং সময়মত চিকিত্সার মাধ্যমে দীর্ঘ, সুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে। ৯৫ শতাংশেরও বেশি সিএইচডি হৃৎপিণ্ডের একটি সাধারণ ত্রুটি, যার জন্য এক সময় অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়, যার পরে শিশু সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে“, ডাঃ দীপক ঠাকুর আইএএনএস-কে বলেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন