মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ নিয়ে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ালো কেরলে। রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে। জানা গেছে মৃত যুবকের বাড়ি কেরালার থ্রিশুর জেলার চাভাক্কাদ কুরাঞ্জিউর অঞ্চলে। ওই যুবক কাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন সেই বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। যুবকের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। উক্ত ব্যক্তিদের আইসোলেশনে রাখার পরামর্শ দিয়েছে কেরালার স্বাস্থ্যদপ্তর।
সূত্রের খবর, UAE থেকে আগত এই যুবক বিদেশেই এক বন্ধুর সংস্পর্শে এসেছিলেন, যাঁর মাঙ্কিপক্স পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ ছিল। দেশে ফিরে তিনি গুরুতর ক্লান্তি এবং এনসেফালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে ২৭ জুলাই (বুধবার) থ্রিশুর হাসপাতালে ভর্তি হন। রোগ সনাক্তকরণে বিলম্ব হওয়ায় জটিল শারীরিক অবস্থায় থাকা ওই ২২ বছর বয়সী যুবকের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ তাঁর পরিবারের। তাঁর মৃত্যু নিয়ে পুন্নায়ুর জেলায় সভা ডেকেছে স্বাস্থ্যদপ্তর।
কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ এই প্রসঙ্গে বলেছেন, মাঙ্কিপক্স কোনও মারাত্মক রোগ নয়। তবে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে বিলম্ব কেন হয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত করা হবে।
উল্লেখ্য, ভারতে এখনও পর্যন্ত ৫ জন মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। যার মধ্যে ৩ জন কেরালার, ১ জন দিল্লির এবং অন্যজন অন্ধ্র প্রদেশের গুন্টুরের বাসিন্দা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, বর্তমানে ৭৮ টি দেশ থেকে ১৮,০০০ জনেরও বেশি পজিটিভ কেস রিপোর্ট করা হয়েছে। মাঙ্কিপক্স হল ‘ভাইরাল জুনোসিস’, অর্থাৎ যা প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে সংক্রামিত হয়। গুটিবসন্তের রোগীদের মধ্যে এই রোগের অনুরূপ লক্ষণ দেখা যেত। যদিও তা এই ভাইরাসের চেয়ে কম গুরুতর ও ক্ষতিকর ছিল। ১৯৮০ সালে গুটিবসন্ত নির্মূল হবার পরে গুটিবসন্তের টিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ন্যাশনাল ইন্সটিউট অফ ট্রান্সফরমিং ইন্ডিয়া (NITI) -এর সদস্য ডাঃ ভি. কে পল বলেন, অযথা আতঙ্কের প্রয়োজন নেই। তবে দেশবাসীর এখন সতর্ক থাকা গুরুত্বপূর্ণ। আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই, তবে মাঙ্কিপক্স বা তার মতো কোনও রকম উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা দিলেই দেরি না করে পরীক্ষা করাতে হবে।
বৃহস্পতিবার WHO-এর পরিচালক ডঃ টেড্রোস বলেছেন, “দেশবাসীরা যদি একটু সচেতনতা অবলম্বন করে এবং মাঙ্কিপক্সের ঝুঁকিগুলিকে গুরুত্ব সহকারে নেয়, তবে দেশে এই রোগের সংক্রমণ বন্ধ করা সম্ভব। তুলনামূলক দুর্বল জনগোষ্ঠীগুলিকে রক্ষা করার জন্য সরকারের স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক। তবেই মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব বন্ধ করা যেতে পারে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন