গত ২৪ ঘণ্টায় গুজরাতের রাজকোটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও পাঁচজনের। কিন্তু উল্লেখযোগ্য, প্রত্যেকেরই বয়স ২০ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। হঠাৎ করে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে এভাবে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বেড়ে যাওয়া চিন্তায় ফেলেছে চিকিৎসক মহলকে। চল্লিশ কিংবা পঞ্চাশোর্ধদের মধ্যে ‘স্বাভাবিক’ হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা তুলনামূলক যুবদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার পিছনে করোনা অতিমারী ও অনিয়মিত জীবনযাপনকেই দায়ী করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
রাজকোট ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। কারও মৃত্যুর কারণ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট, কারও হার্ট অ্যাটাক। মোট কথা, প্রত্যেকেই প্রাণ হারিয়েছেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশকেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল রাজকোটের সিভিল হাসপাতালে। সোমবার সকালে রাজকোটের খোখাদ্দাল এলাকার বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সী রাশিদ খান হঠাৎই অজ্ঞান হয়ে তাকে ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হার্ট অ্যাটাকের কারণেই রাশিদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে, নিজের বাড়িতেই কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়ে জ্ঞান হারিয়ে মুহূর্তের মধ্যে মারা যায় মাত্র ২১ বছর বয়সী ধারা পারমার। তিন বোনের মধ্যে সবচেয়ে কনিষ্ঠ ধারার বাবা একটি চামড়ার কারখানায় কাজ করেন বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, জ্ঞান হারানোর পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ারও সময় দেয়নি বছর একুশের ওই তরুণী। আবার, নেপালের বাসিন্দা ৩৫ বছর বয়সী ললিত পারিহার সোমবার হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মারা যান। ললিত রাজকোটের একটি আবাসনের নিরাপত্তীরক্ষী হিসেবে কাজ করতেন বলে খবর।
সাধারণত ৪০ থেকে ৫০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে হৃদরোগের ঘটনা বর্তমানে খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু ২০ বা ৩০ বছরের ব্যক্তিদের মধ্যে হৃদরোগের প্রবণতা এখনও খুব একটা দেখা যায় না। ঠিক সেই কারণেই রাজকোটের এই ঘটনা চিকিৎসক মহলের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।
রাজকোটের বরিষ্ঠ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ দীনেশ রাজ অবশ্য যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে বাড়তে থাকা হৃদরোগের প্রবণতার পিছনে করোনা অতিমারিকেই দায়ী করেছেন। তার মতে, “করোনা অতিমারি আমাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিয়েছে। তার ফলে অল্পবয়সীদের মধ্যেও উচ্চ রক্তচাপ জনিত হৃদরোগের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে, আমাদের অনিয়মিত জীবনযাত্রা। এইসবের ফলেই অল্পবয়সীদের মধ্যেও এখন হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন