ভারতের মত দেশে সাপের কামড়ে মৃত্যু হওয়ার ঘটনাকে অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া একটি সমস্যা বলে বর্ণনা দিয়েছেন বিজ্ঞানী এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে - এটি অত্যন্ত গুরুতর একটি বিষয় অথচ, যেটির দিকে কেউই সচরাচর গুরুত্ব দিতে চায় না। ভারতবর্ষে প্রতিবছর প্রায় ৫৮ হাজার মানুষ সাপের কামড়ে মারা যান।
সমীক্ষার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ২০০০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কমপক্ষে ১.২ মিলিয়ন ভারতীয় সাপের কামড়ে প্রাণ হারিয়েছেন। যা প্রতিবছরের হিসেবে গড়ে ৫৮,০০০। তথ্য মারফত আরও দেখা গেছে, সাপের কামড়ে সারা বিশ্বের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে ভারতে।
ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল জানিয়েছেন, সাপের কামড় দেশের সবচেয়ে অবহেলিত গ্রীষ্মমন্ডলীয় রোগ (Tropical diseases) গুলির মধ্যে একটি। অর্থাৎ, গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলগুলিতে সাপের কামড়ে মৃত্যুর হার সর্বাধিক।
প্রসঙ্গত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) শুধুমাত্র ২০১৭ সালে সাপের কামড় বা তা থেকে ছড়ানো বিষক্রিয়াকে প্রধান উপেক্ষিত গ্রীষ্মমন্ডলীয় রোগ (Tropical diseases) বলে শ্রেণীবদ্ধ করেছিল।
মহারাষ্ট্রের সেবাগ্রামের মহাত্মা গান্ধী ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের ড: এসপি কালান্তরি উল্লেখ করেছেন, ভারতের ১০টি ছোট গ্রামের মধ্যে ৯টি গ্রামেই এই ধরণের ঘটনা ঘটে। কারণ, বেশিরভাগ গ্রামেই সাপ বসবাস করে। যেখানে বিশেষত বর্ষাকালে রাস্তার আলো অনেক কম থাকে বা কিছু ক্ষেত্রে থাকেই না।
তাঁর কথায়, কৃষি এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে যারা কাজ করেন তাঁদের ক্ষেত্রে সাপের কামড় একটি পেশাগত বিপদ। বর্ষাকালে মাঠে কাজ করার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন তাঁরা। এমনকি, তাঁরা যেসব ছোট কুঁড়েঘরে বাস করে যেখানে সাপ সহজেই প্রবেশ করতে পারে।
মূলত কৃষক, শ্রমিক, শিকারি, উপজাতি ও অভিবাসী জনগোষ্ঠী, সাপুড়ে এবং অন্যান্য প্রান্তিক সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই এদের উচ্চ-ঝুঁকির গ্রুপ হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন