গোটা রাজ্যে ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে অ্যাডিনো ভাইরাস। একের পর এক শিশু ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে। কার্যত বেড পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিবারগুলিকে। শুধুমাত্র কলকাতাতেই শেষ ২৪ ঘন্টায় অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিন শিশুর! চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিকাঠামো নিয়েও সরব হয়েছে বিরোধীরা।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বেশ কিছুদিন ধরেই অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণের খবর প্রকাশ্যে আসছে। তা এত ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে হয়তো চিকিৎসক মহল বুঝে উঠতে পারেনি। বর্তমানে রাজ্যের হাসপাতালগুলির যা অবস্থা তাতে বেডের চরম অভাব রয়েছে। সরকারি হাসপাতাল গুলিতে রেফারের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রীর করা নির্দেশ সত্ত্বেও তা এখনো কমানো যায়নি। আই সি ইউ, এন আই সিইউ, পিআইসিইউ গুলিতে কেবল শিশুদের ভিড়।
শেষ ২৪ ঘন্টায় বিসি রায় হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে দুই শিশুর। একজনের বয়স নয় মাস। নাম জয়শ্রী রায়। বাড়ি হাওড়ায়। তাকে একবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরে যায় নয় মাসের জয়শ্রী। ফের জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাকে। কিন্তু উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে শিশুটি মারা যায় বলে পরিবারের অভিযোগ।
অন্য একজন শিশু অভিজিৎ মন্ডল বয়স আট মাস, তারও মৃত্যু হয়েছে। তবে অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ থাকলেও মৃত্যুর কারণ হিসেবে নিউমোনিয়া লেখা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন চিকিৎসকরা। আবার কলকাতা মেডিকেল কলেজে ওই একই উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিল কল্যাণীর এক শিশু। সব রকম চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি।
বিরোধীদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের একাধিক হাসপাতালে উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যার ফল ভুগতে হচ্ছে শিশুদের। চিকিৎসকরা বার বার সতর্ক করছেন সকলকে। চিকিৎসকদের মতে অ্যাডিনো ভাইরাস থেকে বাঁচতে করোনা বিধির মতোই দূরত্ব বজার রাখতে হবে। কারণ সংক্রমণের ক্ষমতা অনেক বেশি। প্রয়োজনে মাস্ক পরতে হবে। যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের থেকে দূরে থাকা উচিত। জ্বর হলে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে। কোনো মতেই অবহেলা করা চলবে না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন