তালিবানিদের দখলে যাবার পর আফগানিস্তানের অবস্থা খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। আফগানিস্তানে তালিবানি দখলদারি এবং অন্তর্বর্তী সরকার স্থাপনের পর বিভিন্ন দেশ তাদের আর্থিক সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে আরও শোচনীয় অবস্থা হতে চলেছে আফগানিস্তানের।
বর্তমানে প্রতিদিনই আফগানিস্তানে মানবিক সংকট দেখা দিচ্ছে। মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা, প্রয়োজনের জল, খাবার না পাওয়ায় বহু মানুষকে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। যার ফলে বহু শিশু মারা যাচ্ছে। বহু শিশু খাবার না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
সবথেকে খারাপ অবস্থা ঘোর প্রদেশের। যেখানকার সাধারণ মানুষের বক্তব্য অনুসারে শিশুরা না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে। এর আগেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে এই বছরের শেষে আরও বহু শিশু মারা যাবে। গত ছ’মাসে অপুষ্টির কারণে কমপক্ষে ১৭টি শিশু মারা গেছে। যদিও এই হিসাব শুধুমাত্র হাসপাতালের। এর বাইরে যারা হাসপাতালে আসতে পারছে না তাদেরও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। সেই পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর।
ঘোর প্রদেশের পাবলিক হেলথ ডিরেক্টর মুল্লাহ মুহম্মদ আহমদি জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ঘোর প্রদেশেই ৩০০র বেশি অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর চিকিৎসা চলছে। দেশের মধ্যাঞ্চলে ১০০র বেশি শিশু অনাহারে আছে।
ঘোর প্রদেশের অধিবাসীরা জানাচ্ছেন, তাদের কাছে খাবার, পানীয় জল কিছুই নেই। যার ফলে মহিলা ও শিশুরা চরম বিপদের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ঘোর প্রদেশের অধিবাসী আমানুল্লা জানাচ্ছেন – সাম্প্রতিক সময়ে না খেতে পেয়ে বহু শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আমাদের কাছে কোনো খাবার নেই, পানীয় জল নেই। আমাদের কোনো কাজ নেই। যার ফলে আমরা রোজগার করতে পারছিনা, পরিবারকে খাওয়াতে পারছিনা।
একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইউনিসেফ আফগানিস্তানের মুখপাত্র সালাম আল জানাবি। তিনি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি খুবই ভয়ংকর। আমি স্পষ্ট করে সংখ্যা না বলতে পারলেও এটা বলতে পারি শুধুমাত্র অনাহারের কারণে বহু শিশুকে ইতিমধ্যেই চরম মূল্য চোকাতে হয়েছে।
ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে এই বছরের শেষে আফগানিস্তানে ৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ১০ লক্ষ শিশু অপুষ্টির কারণে চিকিতসার ব্যবস্থা করতেই হবে। এছাড়াও প্রায় ৩৩ লক্ষ শিশু অপুষ্টিজনিত কারণে চরম অসুস্থ হয়ে পড়বে।
- with Agency Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন