অতিমারীর রেশ এখনও গোটা বিশ্ব কাটিয়ে উঠতে পারেনি। আর এর মধ্যে বিজ্ঞানীমহলে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে মাঙ্কি পক্স নামে একটি ভাইরাস। বেশকিছুদিন ধরে এই ভাইরাসের কথা শোনা যাচ্ছিল। এবার তার হদিশ আফ্রিকা ছাড়াও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাওয়া গেছে বলে জানা যাছে। আক্রান্তের সংখ্যাও ধীরে ধীরে বাড়ছে ঐসব দেশগুলিতে।
ইংল্যান্ড, স্পেন, পর্তুগাল ও আমেরিকাতে নতুন করে মাঙ্কি ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন। কানাডাতে প্রায় ১০-১৩ জন মাঙ্কি ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।
সুত্রের খবর, মাঙ্কি পক্সের উপসর্গ থাকায় আমেরিকায় অনেকের পরীক্ষা করা হয়েছে। একজনের দেহে এই ভাইরাস পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই ভাইরাসটি অনেকটা বসন্ত রোগের মতো। তবে আপাতত এর কোনও সঠিক চিকিৎসা নেই বলেই দাবি করছেন তারা।
প্রথমে চিকিৎসকদের বক্তব্য ছিল ভাইরাসটি সংক্রামক। প্রধানত নাক, চোখ, মুখ, শ্বাসনালি, ক্ষতস্থান ইত্যাদির মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে অপর ব্যক্তির দেহে। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকলে বা আক্রান্তের পোশাক পরিচ্ছদ ব্যবহার করলে তার মারফতও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তবে নতুনভাবে গবেষণাতে জানা যাচ্ছে যৌন মিলনের ফলেও মাঙ্কি ভাইরাস মানব দেহে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র মতে, এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ হল দুর্বলতা, জ্বর, মাথাব্যথা, পিঠ এবং গায়ে যন্ত্রণা। সাথে কাঁপুনি ও ক্লান্তিও থাকতে পারে। এরপর দেহের বিভিন্ন লসিকা গ্রন্থি ফুলে ওঠার সাথে সাথে ছোট ছোট ক্ষতচিহ্ন দেখা দিতে থাকে মুখে। ধীরে ধীরে সেই ক্ষত সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে
সম্প্রতি, WHO- এর বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই বিরল রোগের জন্য এখনও পর্যন্ত কোনও চিকিৎসা পদ্ধতি তাঁদের জানা নেই। জলবসন্ত বা গুটিবসন্তের জন্য টিকা আবিষ্কার হলেও এই ভাইরাসটি এতোই বিরল যে এর জন্য কোনও টিকা পদ্ধতি তৈরী হয়নি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তিন বছর আগে আমেরিকার একটি সংস্থা মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধ করার জন্য টিকার ছাড়পত্র দেয়। জানা যায় ওই টিকা স্মলপক্সের ক্ষেত্রেও কার্যকরী। এর আগে বিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে মাঙ্কি পক্সের সন্ধান মিলেছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন