কোভিড মোকাবিলায় ভারত সহ তৃতীয় বিশ্বের সমস্ত দেশে প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে কোভিশিল্ড টিকা। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি এই টিকা উৎপাদন করেছিল ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। সেই কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে বলে আদালতে স্বীকার করে নিল টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থা। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলির মধ্যে অন্যতম হল টিটিএস বা ‘থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’। বিরল এই রোগের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে বলে জানা গেছে। যুক্তরাজ্যের হাইকোর্টে ইতিমধ্যেই টিকা প্রস্তুতকারক কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে ৫১টি মামলা রজু হয়েছে। আবেদনে দাবি করা হয়েছে, ওই টিকা ব্যবহারের ফলে বেশি ঝুঁকি রয়েছে কমবয়সিদের।
জেমি স্কট নামে এক ব্যক্তি প্রথম এই সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এই টিকা নেওয়ার পরই মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে স্থায়ী আঘাতের সৃষ্টি হয় তাঁর। এর ফলে কাজ করার ক্ষমতা হারান তিনি। এরপর আরও অনেকেই এভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন থেকেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে মামলা চলছে ব্রিটেনের আদালতে। অবশেষে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার করে নিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
জানা গেছে, টিটিএস-র ফলে কমে যেতে পারে রক্তে প্লেটলেটসের মাত্রা। শরীরে জমাট বাঁধতে পারে রক্ত। যার ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। বিশেষ করে মূলত যাঁরা ভ্যাক্সজেভরিয়া বা অ্যাস্ট্রেজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা নিয়েছেন বা জনসন অ্যান্ড জনসন/জ্যানসেন-এর কোভিড টিকা নিয়েছেন, তাঁদের ঝুঁকি রয়েছে।
কেন হচ্ছে এই প্রতিক্রিয়া? জানা যাচ্ছে, কোভিশিল্ড শরীরে এমন কিছু অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা আমাদের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করা প্রোটিনের ক্ষতি করে।
এই রোগে মস্তিষ্ক, অন্ত্র, পা এবং ফুসফুসে রক্ত জমাট বাঁধে এবং প্রতি মাইক্রোলিটারে ১৫০০০০-এরও নীচে প্লেটলেট নামিয়ে দেয়। রোগটি কমবয়সিদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞ মহল এর উপসর্গ হিসাবে মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা, পেটে যন্ত্রণা, পা ফুলে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, ফিট হওয়া বা জ্ঞান হারানো, ভাবনাচিন্তা করতে সমস্যা হওয়া ইত্যাদিকে চিহ্নিত করেছে। টিকা নেওয়ার দেড় মাসের মধ্যে যদি এমন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, তবে অবিলম্বে চিকিৎসদের পরামর্শ নিতে বলা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন