ন্যশনাল মেডিক্যাল কমিশনের লোগো ঘিরে চিকিৎসক মহলে জোর বিতর্ক। নতুন লোগোতে মাঝে হিন্দু দেবতা ধন্বন্তরির ছবি রয়েছে। কথিত আছে এই ধন্বন্তরি হিন্দু দেবদেবীদের চিকিৎসা করতেন। চিকিৎসা ক্ষেত্রকেও ধর্মীয় রঙ লাগানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেই অভিযোগ করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। এছাড়া লোগোতে ইন্ডিয়ার পরিবর্তে ভারত নাম ব্যবহার করা হয়েছে।
চিকিৎসাশাস্ত্র মূলত পুরোটাই বিজ্ঞান ভিত্তিক। সেখানে ধর্মীয় রীতিনীতির কোনো স্থান নেই। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে চিকিৎসকরা রোগীদের চিকিৎসা করে থাকেন। সেখানে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসার সর্বোচ্চ সংস্থা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের লোগোতে শুধুমাত্র হিন্দু দেবতার ছবি থাকা নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার লোগোটি সকলের নজরে আসে। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, চিকিৎসাশাস্ত্রেও ধর্মের ছোঁয়া লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এখানে ধর্মের কোনো স্থান নেই। এর আগে এই ধরণের ঘটনা কোনোদিন ঘটেনি। আর ভারতের সংবিধানেই লেখা ভারত ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। তাহলে কেবল হিন্দু দেবতার ছবি থাকবে কেন? কোনো ধর্মেরই প্রতীক বা দেবদেবীর ছবি চিকিৎসাশাস্ত্রে ব্যবহার করা উচিত নয়।
চিকিৎসকদের আরেক মহলের দাবি, ধন্বন্তরির ছবি ব্যবহারের সিদ্ধান্তে কোনো ভুল নেই। সকলকে ইতিহাসটা জানতে হবে। এই ধন্বন্তরি আয়ুর্দেব চিকিৎসার মাধ্যমে সকলের রোগ সারিয়ে তুলতেন। পড়ুয়াদেরকে সেই সমস্ত বিষয় অবগত থাকতে হবে।
অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেন, "লোগোতে হিন্দু দেবতা, দেশের নামের পরিবর্তন পূর্ণ গৈরিকীকরণের প্রচেষ্টা যা বিজ্ঞান ও মানবতার চূড়ান্ত পরিপন্থী"।
ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি পাঠিয়েছেন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক শান্তনু সেন। চিঠিতে তিনি জানতে চেয়েছেন, এনএমসি-র কোন মিটিং-এ লোগোর মধ্যে ধন্বন্তরির ছবি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে?
উল্লেখ্য, এই ধন্বন্তরি হলেন বিষ্ণুর অবতার। যিনি মূলত হিন্দু দেবতাদের চিকিৎসক। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র নিয়ে চিকিৎসা করতেন ধন্বন্তরি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন