উৎসবের মরশুমে ফের দেশ জুড়ে করোনার বাড়বাড়ন্ত। দেশে বাড়ছে করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট জেএন ১–এ আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই সমস্ত রাজ্যগুলির উদ্দেশ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে। পাশাপাশি, বুধবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৈঠকও ডাকা হয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ভবনে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক্স হ্যান্ডেলে করা এক পোষ্টে জানিয়েছে, JN.1 কে 'ভ্যারিয়েন্ট অফ ইন্টারেস্ট' হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করে জানিয়েছে বর্তমানে এই ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে যা জানা গেছে তা ইঙ্গিত করে যে এই ভ্যারিয়েন্ট কোনও বড়ো ঝুঁকি তৈরি করে না। তা সত্ত্বেও, উত্তর গোলার্ধে শীত শুরু হওয়ার সাথে, JN.1 অনেক দেশে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।"
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫৮ জন। দেশজুড়ে মোট সংক্রমিত ২,৬৬৯ জন। উল্লেখ্য, কেরলেই পাওয়া গিয়েছিল করোনার এই নয়া ভ্যারিয়েন্ট। তবে এখন শুধু কেরল নয়, কর্ণাটক, গুজরাট, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র থেকেও বেশ কিছু সংক্রমণের খবর এসে পৌঁছেছে। বুধবার দেশে কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬১৪। যা গত ২১ মে-র পর থেকে সবচেয়ে বেশি।
ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে সমস্ত রাজ্যগুলিকে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, পরিস্থিতি যাতে নাগালের বাইরে না যায়, সে বিষয়েও কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই গতকাল অর্থাৎ বুধবার রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য। জরুরী এই বৈঠকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যগুলির প্রস্তুতি কেমন, তা নিয়েই আলোচনা হয়।
উল্লেখ্য, কেরলে এই নয়া ভ্যারিয়েন্ট জেএন ১-এর প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। ৭৯ বছর এক মহিলার শরীরে পাওয়া যায় এই নয়া ভ্যারিয়েন্ট। কেরল সরকারের তথ্য অনুসারে তিনি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। এর আগে তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লি থেকে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন এক মহিলা। তাঁর শরীরেও ধরা পড়েছিল করোনা ভাইরাসের জেএন.১ উপপ্রজাতি। তারপর গোয়াতে এই সংখ্যাটা হয় ১৯ জন। কেরল এবং মহারাষ্ট্রে এক জন করে আক্রান্ত হয়েছেন। তার পর থেকেই এই নয়া ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রাক্তন প্রধান বিজ্ঞানী ডঃ সৌম্যা স্বামীনাথন এক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, "আমরা একটি নতুন বৈকল্পিক, JN.1 দেখতে পাচ্ছি, যা ওমিক্রনের এক সাব-ভেরিয়েন্ট। আমাদের অনুমান, এটিও ওমিক্রনের মতোই আচরণ করবে, যা তুলনামূলকভাবে সামান্য প্রভাবযুক্ত। যদিও প্রতি নতুন ভ্যারিয়েন্টই আরও সংক্রমণযোগ্য হওয়ার কিছু বৈশিষ্ট্য যুক্ত হয়। আমাদের শরীরে ইতিমধ্যে থাকা অ্যান্টিবডিগুলিকে এরা এড়াতে সক্ষম। তাই সংক্রমণের এই ঢেউ যারা ইতিমধ্যেই সংক্রামিত হয়েছেন তাদেরও সংক্রামিত করতে পারে।"
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা JN.1 কে "ভ্যারিয়েন্ট অফ ইন্টারেস্ট" হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে এবং জানিয়েছে এটি কোনও বড় ঝুঁকি তৈরি করে না।
নতুন ভ্যারিয়েন্টের লক্ষণ হিসেবে বলা হয়েছে:
জ্বর
সর্দি
গলা ব্যথা
মাথাব্যথা
কিছু ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা
চরম ক্লান্তি
ক্লান্তি এবং পেশী দুর্বলতা
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন উপসর্গগুলি দুই দিনেরও বেশি সময় ধরে থাকলে তবেই কোভিড পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন।
- With inputs from Agency
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন