দিল্লীর নয়ডাতে ঘটে যাওয়া জঘন্য হত্যাকাণ্ডের ফলস্বরূপ মাথায় গুলি লেগে মারা যায় ৬ বছরের ছোট্ট রোলি। আদরের মেয়ের মৃত্যুশোকের পরও মানবতার নজির গড়লেন রোলির বাবা-মা। এইমসে মৃত মেয়ের অঙ্গ-প্রতিস্থাপন করলেন তাঁরা। রাজধানীর বুকে সবচেয়ে কম বয়সী অঙ্গ-প্রতিস্থাপকের নাম হল রোলি প্রজাপতি।
গত ২৭ এপ্রিল দিল্লীর এইমসে ভর্তি করা হয় রোলিকে। ডাক্তারেরা জানান, গুলিটি আশঙ্কাজনক অবস্থায় মাথার মধ্যে গেঁথে রয়েছে। যা অপারেশনেও ঝুঁকি রয়েছে। মাথার ভিতেরের অবস্থা জটিল। অনেক চেষ্টা করেও ডাক্তারেরা তাকে বাঁচাতে পারেননি। ব্রেনডেথ ঘোষণা করা হয় ৬ বছরের ছোট্ট রোলিকে।
মেয়ের অকাল মৃত্যুতে প্রচণ্ড ভেঙ্গে পড়েন মা-বাবা। কিছুতেই তাঁরা এই ঘটনা মেনে নিতে পারছিলেন না। ডাক্তারদের তরফেও জানানো হয় এই ঘটনা খুবই ট্র্যাজিক। হাসপাতাল তরফে কাউন্সিলিং করানোও হয় তাঁদের। রোলির মৃত্যুর পর এইমসের ডাক্তারেরা তার বাবা-মাকে অঙ্গ-প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব দেন। তাঁরা ডাক্তারদের এই প্রস্তাবে সম্মত হন। মেয়ের মৃত্যু-শোক সামলে এই ধরণের সিদ্ধান্ত নজির সৃষ্টি করেছে। ডাক্তারেরা এই ঘটনার প্রশংসা করেছেন।
অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অব মেডিক্যাল সাইন্সেস্ (এইমস) এর তরফে জানানো হয়েছে, রোলির লিভার, কিডনি, দুটি কার্নিয়া ও হার্টের ভাল্বগুলি প্রতিস্থাপন করে ৫ জন মানুষের প্রান বাঁচানো সম্ভব। এইমস কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, ১৯৯৪ সাল থেকে হাসপাতালে অঙ্গদান প্রক্রিয়া চলে আসছে। এই ঘটনা শুধু হাসপাতালের ইতিহাসেই নয়, দিল্লি তথা দেশের মধ্যে এত কম বয়সী অঙ্গদান করার নজির বিশেষ নেই।
এই ঘটনার শেষে রোলির মা পুনাম দেবী বলেছেন - মেয়ে তাঁদের ছেড়ে চলে গেছে, তাঁদের এই ক্ষতি অপূরণীয়, কিন্তু মৃত্যু সজ্জায় সে পাঁচজনের জীবন বাঁচাতে পেরেছে।একদিকে মেয়ের অকাল-মৃত্যু, অন্যদিকে ৫জন মানুষের উদ্দেশ্যে অঙ্গদান - এই অভূতপূর্ব মানবিক কর্মকান্ডের সাক্ষী থাকলো দিল্লি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন