কোভিডের পর গোটা বিশ্বে মহামারির আকার ধারণ করতে ডিজিজ এক্স (Disease X)। ২০২০ সালে কোভিড অতিমারিতে পৃথিবী জুড়ে যে সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, এই ডিজিজ এক্স-এর আক্রমণে তার দ্বিগুণেরও বেশি মানুষ মারা যেতে পারে। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন এক ব্রিটিশ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
এই নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organisation : WHO) মত, এই নতুন রোগ ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস যেকোনো রূপে মানবসভ্যতার উপর আঘাত হানতে পারে। এই রোগের কোনোরকম চিকিৎসা পদ্ধতি এখনও পর্যন্ত আবিস্কার হয়নি বলে দাবি হু-এর।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি মেইল’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কেট বিংহ্যাম জানিয়েছেন, “১৯১৯-২০ সালে সারা বিশ্ব জুড়ে বিধ্বংসী প্রভাব বিস্তার করেছিল স্প্যানীশ ফ্লু। সেই সময় স্প্যানীশ ফ্লু-এর কবলে বিশ্বে প্রায় ৫ কোটি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যে সংখ্যক মানুষ মারা গিয়েছিল, স্প্যানীশ ফ্লুয়ের আক্রমণে তার দ্বিগুণ মানুষ মারা গিয়েছিল। বর্তমানে, পৃথিবীতে যে ভাইরাসগুলি রয়েছে তাঁদের মধ্যে অনেকেই সেইরকম বিধ্বংসী প্রভাব ফেলতে মানবসভ্যতার উপরে।”
কিন্তু এর প্রতিকার কী হতে পারে? কীভাবে এই মারণ আক্রমণ থেকে মানবসভ্যতাকে রক্ষা করা যাবে? ২০২০ সালের মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্রিটিশ ভ্যাকসিন টাস্কফোর্স-এর চেয়ারম্যান পদে থাকা বিংহ্যাম জানিয়েছেন, “এই আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে গোটা বিশ্বকে এখন থেকেই গণ টিকাকরণ অভিযান চালু করে প্রস্তুতি নিতে হবে। রেকর্ড সময়ের মধ্যে টিকাকরণ সারতে পারলেই কিছুটা তৈরি থাকা যাবে।” তার মতে, বিজ্ঞানীরা এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র ২৫টি প্রজাতির ভাইরাসকে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু এর বাইরে বিশ্বে দশ লক্ষেরও বেশি অনাবিষ্কৃত প্রজাতির ভাইরাস থাকতে পারে।
বিংহ্যাম আরও জানিয়েছেন, “২০১৯-২০ সালে কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রকোপে বিশ্ব জুড়ে ২ কোটিরও বেশি মানুষ মারা গেলেও সত্যি বলতে আমরা এক্ষেত্রে ভাগ্যবান। কারণ, কোভিডের আক্রান্ত হওয়ার পরেও বেশিরভাগ মানুষই সেরে উঠেছেন। এখন কল্পনা করুন, এই ডিজিজ এক্স হল হাম ও ইবোলার সংমিশ্রণ। এটি হামের মতো সংক্রামক হতে পারে এবং এতে আক্রান্তের মৃত্যুর হার হতে পারে ইবোলা ভাইরাসের মতো। এই মুহূর্তে হয়তো বিশ্বের কোনও এক প্রান্তে চুপচাপ বংশবিস্তার করে চলেছে এই রোগের ভাইরাস। সুদূর বা অতি সুদূর ভবিষ্যতে হয়তো কেউ এর দ্বারা আক্রান্ত হবে।” প্রসঙ্গত, চেনা-পরিচিত ভাইরাসের মধ্যে ইবোলা ভাইরাসে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি (৬৭ শতাংশ)।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন