Covid 19: করোনাকালে শিশুদের জীবনদায়ী টিকা তৈরীতে ভাটা, আশঙ্কা প্রকাশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

কোভিডের কারণে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২৫ মিলিয়ন শিশু জীবন রক্ষাকারী টিকা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনাইটেড নেশনস।
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবিফাইল চিত্র - সংগৃহীত
Published on

কোভিড অতিমারী সামাল দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যরক্ষার অন্যান্য পদক্ষেপ গুলি কার্যত ভুলতে বসেছে ভারত সহ বেশ কয়েকটি দেশের সরকার। ঠিক এমনটাই জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।

কোভিডের কারণে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২৫ মিলিয়ন শিশু জীবন রক্ষাকারী টিকা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘ নতুন একটি প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে, ২০২১ সালে শৈশবকালীন টিকাদানে তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় পশ্চাদপসরণ দেখেছে বিশ্ব। যা প্রাথমিকভাবে অতিমারীর কারণেই ধাক্কা খেয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে এ প্রসঙ্গে। রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে WHO জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ভারত সহ আরও চারটি দেশের অন্তত আড়াই কোটি শিশু জীবনদায়ী টিকা পায়নি। সময়মতো টিকাকরণ না হওয়ার ফলে সেই দেশগুলিতে হাম, পোলিওর মত রোগ বেশি করে ছড়াতে শুরু করেছে।

এ প্রসঙ্গে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস জানিয়েছেন, "অতিমারী নিয়ে সতর্কতা এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি জরুরি, এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। তবে তার পাশাপাশি অন্য রোগগুলিকে অবহেলা করলে চলবে না। কোভিড মোকাবিলার সঙ্গে হাত ধরাধরি করেই হাম, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়ার মতো মারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়াইকেও টিকিয়ে রাখতে হবে।"

রাষ্ট্রসংঘের সর্বশেষ প্রতিবেদন:

১) ডিপথেরিয়া, ধনুষ্টংকার, পার্তুসিসের মত রোগকে প্রতিহত করতে যে তিনটি টিকা দেওয়া হয় শিশুদের তাকে একত্রে ডিটিপিথ্রি বলা হয়। এই ডিটিপিথ্রি দেওয়ার প্রবণতা ২০১৯-২০২১ সালের মধ্যে ৫ শতাংশ কমেছে। অথচ এই ডিটিপিথ্রি টিকাই প্রতিটি দেশের দেশবাসীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ভিত তৈরি করে।

২) ভ্যাকসিন কভারেজ হ্রাসের জন্য বেশ কয়েকটি কারণকে দায়ী করা হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের প্রতিবেদনে উদ্ধৃত কারণগুলির মধ্যে একটি হল একটি বর্ধিত সংখ্যক শিশুদের বিপৎসংকুল পরিবেশে বসবাস যেখানে টিকাদান অ্যাক্সেস প্রায়শই চ্যালেঞ্জিং।

৩) এই পরিস্থিতির প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়েছে তথ্যমূলক বিভ্রান্তি এবং পর্যাপ্ত টিকা যোগান দেওয়ার অভাবকে। করোনা অতিমারী ঠেকাতে টিকা উৎপাদনকারীরা মূলত জোর দিয়েছে করোনার টিকা তৈরীর দিকে। যার ফলে সদ্যজাত এবং শিশুদের জীবনদায়ী টিকা তৈরীর ক্ষেত্রে যথেষ্ট সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

৪) ডিটিপিথ্রি টিকা দেওয়া সবচেয়ে বেশি কমেছে পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার দেশগুলিতে। বিগত দু’বছরে শুধু এই এলাকায় ৯ শতাংশ কমেছে শিশুদের জীবনদায়ী টিকাকরণ।

৫) ভারত, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইথিওপিয়া এবং ফিলিপিন্সে গত প্রায় দু'কোটি শিশু এক বছরে এক ফোঁটা টিকাও পায়নি।

৬) ইউনিসেফের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর শিশু-স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যানকে ‘বিপদ সঙ্কেত’ বলেও উল্লেখ করেছেন।

৭) জরায়ু মুখে হওয়া ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ২০১৯ সালে অর্জিত হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস ভ্যাকসিনের বিশ্বব্যাপী কভারেজের এক চতুর্থাংশ এক ধাক্কায় কমেছে।

৮) হামের প্রথম টিকা তৈরীর ক্ষেত্রে ৮১ শতাংশের বিস্ময়কর পতন দেখা গেছে। যা ২০০৮ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন পরিসংখ্যান।

প্রতীকী ছবি
Covid-19: পুরোপুরি শেষ হয়নি কোভিড, ক্রমাগত বদলাচ্ছে রূপ - দেশে নতুন করে আক্রান্ত ১৮,৮১৯

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in