কলকাতায় ভুয়ো কোভিড ভ্যাকসিনকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া দেবাঞ্জন দেবের সাথে যোগাযোগ রয়েছে শাসক দলের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্বের নাম। কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি সূত্রে খবর, ফিরহাদ হাকিম, অভিষেক ব্যানার্জি এমনকি মমতা ব্যানার্জিরও নাম উঠে এসেছে। এদের সকলকেই সমন পাথানর কথা ভাবছে ইডি।
লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ালো ভুয়ো ভ্যাকিসনকাণ্ড। ২০২১ সালে ভুয়ো ভ্যাকসিন দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল দেবাঞ্জনকে। মোট ১১টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। কলকাতা পুলিশ তদন্তভার হাতে নেয় এবং আর্থিক তছরুপের দিকটির তদন্ত শুরু করে ইডি। গণশক্তি পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই তদন্তে আদালতে বিস্ফোরক সব তথ্য পেশ করছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। সূত্রের খবর, ধৃত ব্যক্তির সাথে নাকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি এবং কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম সহ একাধিক তৃণমূল নেতার যোগ রয়েছে।।
বিশেষ আদালতে এই তথ্য জমা দিয়েছে ইডি। ওই তথ্যের ভিত্তিতেই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নামে সমন জারি করার আবেদন জানিয়েছে সংস্থা। মামলাতে ওই ব্যক্তিদের যুক্ত করা সম্ভব কিনা তারও আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। তবে আদালতের সিদ্ধান্ত এখনও জানা যায়নি।
২০২১ সালে অতিমারীর সময় দেবাঞ্জন দেবের কাণ্ড প্রকাশ্যে আসে। প্রকাশ্যে আনেন তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। দেবাঞ্জন আয়োজিত কসবার একটি ভ্যাকসিন সেন্টার থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন তিনি। বাড়ি ফেরার পরেও তাঁর ফোনে কোনো মেসেজ না যাওয়ায় তিনি পুরো বিষয়টা কলকাতা পুরসভায় জানান। তারপরেই অভিযোগের ভিত্তিতেই কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করেছিল দেবাঞ্জনকে।
তারপর থেকেই দেবাঞ্জন সম্পর্কে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে থাকে। প্রথম থেকেই শোনা গিয়েছিল ফিরহাদ হাকিমের ঘনিষ্ঠ এই দেবাঞ্জন। ২০২১ সালের প্রথমদিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি মূর্তি উন্মোচন করেছিলেন ফিরহাদ হাকিম। সেখান একটি ফলকে দেখা যায় দেবাঞ্জন দেবের নাম। পরিচয় হিসেবে দেওয়া হয়েছিল রাজ্যের যুগ্ম সচিব।
শুধু তাই নয় সূত্রের খবর, ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচনে কমিশনের একজন কর্মী হিসেবেও কাজ করেছিলেন দেবাঞ্জন। ভোটার লিস্টের কাজের সাথেও তিনি যুক্ত ছিলেন। এই দেবাঞ্জন দেব একজন ভুয়ো আইএএস অফিসার। কিন্তু পুরসভার যে আইডি কার্ড ব্যবহার করতেন তা আসল।
উল্লেখ্য, এই ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে আপাতত জামিন পেয়েছেন দেবাঞ্জন। জামিন পেয়েই কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন তিনি। জনপ্রিয় এক সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, কলকাতা পুলিশ মিথ্যা মামলা সাজিয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। কোন যুক্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে সেটাই নাকি ঠিক করে আদালতে পেশ করতে পারেনি কলকাতা পুলিশ। সেই কারণেই তিনি জামিন পেয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন