গত কয়েকদিন ধরে গোটা দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে আতঙ্কিত কেন্দ্র এবং বিভিন্ন রাজ্য প্রশাসন। এই মুহূর্তে দেশের ছ'টি রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার যথেষ্ট বেশি। আংশিক লকডাউন, নাইট কার্ফু ও অন্যান্য নিয়মকানুন লাগু করে করোনা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু একমাত্র উপায় যেটা, সেই কোভিড বিধি মেনে না চলার দরুন করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
আগামী দিনে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, সেই আশঙ্কা করে কোভিড হাসপাতালগুলিকে তৈরি হওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। শুধু তাই নয়, কোথায় কেন সংক্রমণ বাড়ছে, তা নিয়ে আজ সব জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা বসবে স্বাস্থ্য দফতর। সোমবার রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহনের জারি করা নির্দেশিকা রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের সুপার, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের পাঠানো হয়েছে। রাজ্যের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও এদিন সব জেলাশাসককের সঙ্গে বৈঠক করেন। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হাসপাতালগুলির সব যন্ত্রপাতি, মেডিক্যাল গ্যাস পাইপলাইন সিস্টেম (এমজিপিএস) পরীক্ষামূলক ভাবে খতিয়ে দেখতে হবে।
প্রয়োজনে দ্রুত মেরামত করতে হবে। অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ, পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস পর্যাপ্ত মজুত রাখার পাশাপাশি সবক্ষেত্রে পর্যাপ্ত কর্মী আছে কিনা, করোনা হাসপাতালে খাবার সরবরাহ, বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা সমস্ত কিছুই ক্ষতি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাফাই কাজের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলিকেও সতর্ক করার কথা বলা হয়েছে।, জেলার যে হাসপাতালগুলি নন-কোভিড হয়ে গিয়েছে, তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। যাতে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় শয্যা সঙ্কট তৈরি না হয়। অক্সিজেন সরবরাহ যাতে ঠিকঠাক থাকে।
এক জেলা আধিকারিকের কথায়, ভোট কর্মীদের যাবতীয় সরঞ্জাম দেওয়ার পাশাপাশি ভোট প্রচার ও নির্বাচনের অন্যান্য বিষয়ে কোভিডবিধি মান্য করায় জোর দিতে বলা হয়েছে। আরটিপিসিআর পরীক্ষাও বাড়াতে বলা হয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা স্পষ্ট জানান, লকডাউন অথবা কন্টেনমেন্ট জোন করা নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। এমন পরিকল্পনা এখনই সরকারের নেই।
তবে, পরিসংখ্যান বলছে, গত ১ মার্চ দৈনিক আক্রান্ত ১০০-র ঘরে, সেটাই শেষ কয়েক দিনে বেড়ে পৌঁছেছে ৪০০-র-ঘরে। সোমবার রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৬৮ জন। ১ মার্চ থেকে ২২ মার্চের মধ্যে সব থেকে বেশি আক্রান্ত ছিল ২১ মার্চ (৪২২ জন)। উল্লেখ্য, করোনায় আক্রান্ত হয়ে এদিনই উত্তরবঙ্গে মানস জোয়ারদার (৫৬) নামে কৃষি দফতরের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন