রান্নাতে সবথেকে প্রয়োজনীয় জিনিসের একটি হলুদ গুঁড়ো। কিন্তু সেই হলুদ গুঁড়োতে বারবার ভেজাল মেশানোর অভিযোগ উঠছে। এবার হলুদ গুঁড়োতে অত্যাধিক পরিমাণে সীসা মেশানোর খবর সামনে আসছে। এই বিষ শরীরে প্রবেশ করলে কিডনি, হার্টের জটিল সমস্যা হতে পারে বলেই জানা যাচ্ছে।
সম্প্রতি আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভারতের পিয়োর আর্থ ও ফ্রিডম এমপ্লয়বিলিটি অ্যাকাডেমি এমনই তথ্য সামনে এনেছে। শুধু ভারত নয়, নেপাল ও পাকিস্তানের ২৩ টি শহরে সমীক্ষা চালিয়ে ভেজাল হলুদের খবর সামনে এনেছে। জানা গেছে ভারতের চেন্নাই, গুয়াহাটি, পাটনা-সহ মোট ৭ টি শহরে মিলেছে অতিরিক্ত সীসা মেশানো হলুদের খোঁজ। এছাড়া নেপালে কাঠমান্ডু, পাকিস্তানের করাচি, ইসলামবাদ ও পেশোয়ারে হলুদ গুঁড়োতে মাত্রাতিরিক্ত সীসা পাওয়া গেছে।
হলুদ গুঁড়োতে সীসা মেশানো হয়। কিন্তু সীসার পরিমাণ কতটা হবে, সেটার মাপকাঠি ঠিক করে দেয় ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা এবং মান বিষয়ক কর্তৃপক্ষ (এফএসএসএআই)। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীন এই সংস্থার রিপোর্ট বলছে, প্রতি গ্রাম হলুদে ১০ মাইক্রোগ্রামের বেশি সীসা মেশানো যাবে না। এই পরিমাণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু উদ্ধার হওয়া ভেজাল হলুদে ১০০০ মাইক্রোগ্রামের বেশি সীসা পাওয়া গেছে। যা স্বাস্থ্যের জন্য বিশাল ক্ষতিকর।
অতিরিক্ত সীসা মেশানো হলুদ গুঁড়ো খেলে শরীরে কী ক্ষতি হয়?
এফএসএসএআই জানাচ্ছে, অতিরিক্ত সীসা শরীরে প্রবেশ করলে কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভবনা রয়েছে। এছাড়া এর ফলে বাড়তে পারে হৃদরোগের আশঙ্কা। বেড়ে যেতে পারে রক্তচাপ। অতিরিক্ত সীসা শিশুদের শরীরে প্রবেশ করলে তা হাড়ের গঠন ও বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে। অন্তঃসত্ত্বাদের শরীরে বেশি পরিমাণে সীসা গেলে ভ্রূণের গঠন সম্পূর্ণ হবে না। অপরিণত শিশু জন্মের ঝুঁকি থেকে যাবে।
কীভাবে চিনবেন ভেজাল হলুদ গুঁড়ো?
এফএসএসএআই জানিয়েছে, এক গ্লাস জলে এক চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে নেবেন। যদি হলুদ গুঁড়ো গ্লাসে নীচে জমা হয় অথবা গ্লাসের জলের রঙ অনেকটাই ফিকে হয়ে যায়, তাহলে বুঝবেন সেটা খাঁটি হলুদ গুঁড়ো। কিন্তু যদি গ্লাসের জলের রং উজ্জ্বল হলুদ হবে, বুঝে নিতে হবে সেটাই ভেজাল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন