সরকারিভাবে পোলিও মুক্ত হলেও বছরে সর্বাধিক যক্ষ্মারোগীর হিসেবে ভারত এখনও বিশ্বের মধ্যে প্রথম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, ২০২২ সালে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছেন এই ভারতেই।
মঙ্গলবার WHO-এর তরফে প্রকাশিত ২০২৩ বিশ্বব্যাপী টিবি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে গোটা বিশ্বে যত পরিমাণ মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছেন, তার মধ্যে সর্বাধিক ২৭ শতাংশ রোগী ভারতেই রয়েছেন।
রিপোর্ট বলছে, ২০২২ সালে ভারতে মোট ২৮.২ লক্ষ মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছেন। এবং আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার প্রায় ১২ শতাংশ। স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, গত বছরে ভারতে মোট ৩ লক্ষ ৪২ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। তার মধ্যে ৩ লক্ষ ৩১ হাজার রোগী এইচআইভি নেগেটিভ ছিলেন এবং ১১ হাজার মৃত রোগী যক্ষ্মার পাশাপাশি এইচআইভি রোগেও আক্রান্ত ছিলেন।
WHO রিপোর্ট অনুসারে ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী নতুনভাবে টিবি ধরা পড়া মানুষের সংখ্যা ছিল ৭৫ লক্ষ। ১৯৯৫ সালে বিশ্বব্যাপী টিবি পর্যবেক্ষণ শুরু করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO। তথ্য অনুসারে এর পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালেই সর্বোচ্চ সংখ্যায় মানুষ টিবি-তে আক্রান্ত হয়েছেন। যা ২০১৯ সালে প্রাক কোভিড সময়ের বেসলাইন ৭১ লক্ষ থেকেও বেশি। ২০২০ সালে এই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৮ লক্ষ এবং ২০২১ সালে ৬৪ লক্ষ।
WHO-এর ওই রিপোর্ট থেকে আরও জানা গিয়েছে, ভারত-সহ বিশ্বের মধ্যে মোট ৩০টি দেশে যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ওই ৩০টি দেশের আক্রান্ত রোগীর পরিমাণ বিশ্বের মোট আক্রান্তের প্রায় ৮৭ শতাংশ। তালিকায় ভারত ছাড়াও রয়েছে ইন্দোনেশিয়া (১০ শতাংশ), চিন (৭.১ শতাংশ), ফিলিপিন্স (৭ শতাংশ), পাকিস্তান (৫.৭ শতাংশ), নাইজেরিয়া (৪.৫ শতাংশ), বাংলাদেশ (৩.৬ শতাংশ) এবং ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো (৩ শতাংশ)।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের জন্য এখনও চিন্তার প্রধান একটি কারণ মাল্টিড্রাগ-রেসিস্ট্যান্ট টিবি (MDR-TB)। ভারতে ২০২২ সালে প্রায় ১.১ লক্ষ মানুষ এই বিশেষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছেন।
WHO-এর বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মা বিভাগের প্রধান ডাঃ তেরেজা কাসাইভা জানিয়েছেন, “অধিকাংশ দেশেই যক্ষ্মা রোগীর আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য সুস্থতার হার ও স্বাস্থ্য পরিষেবার সহজলভ্যতাকে দায়ী করা হয়। ২০২০ ও ২০২১ সালে বিশ্ব জুড়ে নতুনভাবে যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যায় প্রায় ৬০ শতাংশ হ্রাসের সম্মিলিত কারণ হয়েছিল ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপিন্স।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন