হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। পুজোতে সকলেই চায় নিজেকে সুন্দর দেখাতে। সেকারণে পুজোর আগে থেকে চলে রূপচর্চা। আর বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় ‘আইস ফেসিয়াল’। পুজোর আগে দাগছোপহীন ঝকঝকে মুখ পেতে অনেকেই রোজ বরফ ঘষেন মুখে। কিন্তু সকলের ত্বকের জন্য এই ফেসিয়াল সমান উপকারী নয়।
গরমকালে ব্রণ, ফুসকুড়ি, র্যাশ, ত্বকের জ্বালাভাব কমাতে বরফ ব্যবহার করেন অনেকেই। আবার তাড়াতাড়ি মুখের কালচে ভাব দূর করে ত্বক উজ্জ্বল ও জেল্লাদার করে তুলতে মুখে বরফ বুলিয়ে নেন অনেকেই। চোখের নিচের ফোলাভাব কমাতে বরফের জুড়ি মেলা ভার। এছাড়া মুখের রোম তোলার পর বরফ মুখে বুলিয়ে আরাম পাওয়া যায়। কিন্তু সমস্ত ত্বকে একই রকম সুবিধা পাওয়া যায়না এই ফেসিয়ালের। আবার নিয়ম মেনে এই ফেসিয়াল না করলে হিতেবিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা। সম্প্রতি আইস ফেসিয়াল নিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন এস্থেটিশিয়ান লরি স্কারসো।
আইস ফেসিয়ালের সুবিধা –
মুখের ফোলাভাব এবং কোমলতা হ্রাস করতেঃ কোনো জায়গায় আঘাত পেলে, সেই জায়গাটি যাতে না ফুলে যায়, সেকারণে ব্যবহার করা হয় বরফ। লরি জানাচ্ছেন, মুখের ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার একই। লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম থেকে অতিরিক্ত তরল নিষ্কাশন করে মুখের ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে বরফ।
চোখের নিচের ফোলাভাব দূর করতেঃ রাতে ঠিকঠাক ঘুম না হলে বা সারাদিনে অতিরিক্ত চাপের ফলে চোখের নিচের অংশ ফুলে যায়। লরি জানাচ্ছেন, চোখের নীচে আইসিং করলে, এর ফলে তরল জমাট কমে যায়, টক্সিন নিষ্কাশন করে এবং শক্ত প্রভাব সৃষ্টি করতে সাহায্য করে।
গায়ের রং উজ্জ্বল করতেঃ নিয়মিত রোদে রেরোলে ত্বকে ট্যান পড়ে অনেকের। আইসিং মুখের রক্তনালীগুলিকে সংকুচিত করে, যা ছিদ্র এবং বলি রেখার উপস্থিতি কমিয়ে দেয় এবং সামগ্রিকভাবে ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন বরফ?
লরি জানাচ্ছেন, সরাসরি মুখে বরফ ব্যবহারের ফলে জ্বালা বা লাল ভাবের সৃষ্টি হতে পারে। তাই সুতির কাপড় বা তোয়ালেতে বরফের টুকরো নিয়ে আলতো করে গোটা মুখে বুলিয়ে নিতে হবে। এক জায়গায় বেশি ক্ষণ ধরে রাখলেই সেখানকার ত্বকে পোড়া দাগ হয়ে যেতে পারে। তবে আইশ ফেসিয়াল করার পর অবশ্যই ব্যবহার করবেন ময়েশ্চারাইজার।
কাদের এড়িয়ে চলা উচিত আইস ফেসিয়াল?
পাতলা বা সংবেদনশীল ত্বক হলে এড়িয়ে চলুন আইস ফেসিয়াল। যদি দেখা যায়, বরফ লাগালেই ত্বক ফুলে উঠছে বা লালচে দাগ পড়ে যাচ্ছে, তা হলে বরফ না ব্যবহার করাই ভাল। অথবা সদ্য কোনো কসমেটিক সার্জারি বা লেজার ট্রিটমেন্ট করালে এড়িয়ে চলুন বরফ।
বরফ বেশি ব্যবহার করলে ‘আইস বার্ন’ হতে পারে। ত্বকের যে অংশ বরফের সংস্পর্শে বেশি আসবে, সেখানকার কোষগুলির ক্ষতি হতে পারে। ত্বকের কোষ জমে শক্ত হয়ে যেতে পারে, ফলে সেখানে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল ব্যাহত হবে। অক্সিজেনের অভাব দেখা দেবে। কোষ নষ্ট হয়ে ক্ষতের দাগ তৈরি হবে। কালচে পোড়ার মতো দাগও হতে পারে।
দিনে কতবার বরফ মুখে ব্যবহার করা যায়?
লরি জানাচ্ছেন, দিনে একবারই বরফ ব্যবহার করা যেতে পারে। বরফ দিয়ে ফেশিয়াল করলে খুব অল্প সময়ের জন্যই ত্বকে বরফ লাগানো উচিত।
মনে রাখবেন, প্রতিরোধের পাশাপাশি কোনো শর্টকাট বা দ্রুত সমাধান কাজ করে না। ত্বক থেকে ব্রণ, ফুসকুড়ি, র্যাশ পুরোপুরি এড়াতে, ঘুম, হাইড্রেশন এবং পুষ্টিকে অগ্রাধিকার দিন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন