আদালতের লড়াইয়ে আবারও বিপাকে জনপ্রিয় শিশু প্রসাধনী প্রস্তুতকারক সংস্থা জনসন অ্যান্ড জনসন। ছোটবেলা থেকে শতবর্ষ পুরনো এই কোম্পানির বেবি পাউডারের সংস্পর্শে এসে শরীরে মারণরোগ ক্যানসার বাসা বেঁধেছে বলে ক্যালিফোর্নিয়ার অকল্যান্ড স্টেট আদালতে অভিযোগ জানান জনৈক এমরয় হার্নান্ডেজ ভালাডেজ।
মঙ্গলবার সেই মামলার রায়ে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, হার্নান্ডেজকে ১৮.৮ মিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মূল্যে ১ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে জনসন অ্যান্ড জনসনকে। তবে কোম্পানির বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগের পক্ষে হার্নান্ডেজের তরফে দেওয়া তথ্য-প্রমাণের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদন করার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গত বছর ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতে ২৪ বছর বয়সী এমরয় হার্নান্ডেজ ভালাডেজ অভিযোগ করেন, ছোটবেলা থেকে জনসন অ্যান্ড জনসনের বেবি পাউডার ব্যবহার করছেন তিনি। যার ফলে তাঁর শরীরে মেসোথেলিওমা ক্যানসার বাসা বেঁধেছে। তাঁর হৃদপিণ্ডের চারিদিকের কোষ-কলায় ওই ক্যানসার ছড়িয়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি। তাই ওই শিশু প্রসাধনী প্রস্তুতকারক কোম্পানির কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে মামলা করেন হার্নান্ডেজ।
আদালতের মতে, ওই কোম্পানির পাউডার ব্যবহার করে হার্নান্ডেজের যে ক্ষতি হয়েছে, হাসপাতালের যে বিল হয়েছে, যে পরিমাণ কষ্ট তাঁকে সহ্য করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে, সেই সবকিছুর জন্য কোম্পানির তরফ থেকে এইটুকু ক্ষতিপূরণ তাঁর প্রাপ্য। এর পাশাপাশি, এই কোম্পানির বিরুদ্ধে গত কয়েকবছর ধরে যত মামলা করা হয়েছে, সেই সব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে জনসন অ্যান্ড জনসন কোম্পানির বিরুদ্ধে আমেরিকার বিভিন্ন আদালতে প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি অভিযোগ জমা রয়েছে। তবে এই অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে জনসন অ্যান্ড জনসন কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
তাঁদের দাবি, “গোটা বিশ্বের অসংখ্য মানুষের উপর এই প্রোডাক্ট বহুবার পরীক্ষা করা হয়েছে। সেই জন্যই বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের কাছে জনসনের পাউডারই প্রথম পছন্দ।”
কোম্পানির আইনি বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট এরিক হাস এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “আমাদের প্রোডাক্ট সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। এতে কোনও অ্যাসবেস্টস নেই এবং এটির জন্য ক্যানসার হয় না।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন