চীনে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। বাদ নেই ভারতও, যার জেরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মোট ৪ জন ভারতীয়র দেহে চিনের এই করোনার নতুন উপরূপ ওমিক্রন বিএফ.৭-র উপসর্গ পাওয়া গেছে। আক্রান্তরা গুজরাট এবং ওড়িশার বাসিন্দা। বুধবার, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বৈঠকে কোভিড নিয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে প্রতিদিন বৈঠক করা হবে বলে জানানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে হওয়া বৈঠকে হাজির থাকবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদী।
বিশেষজ্ঞরা আগেই জানিয়েছিলেন, করোনা কখনই একেবারে শেষ হয়ে যাবে না। ২০২০ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত গবেষণায় করোনা ভাইরাসের অনেকগুলি ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মিলেছে। তার মধ্যে একটি হলো ওমিক্রন বিএফ.৭। এটি ওমিক্রনের বিএ.৫-এর একটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট।
করোনার নতুন উপরূপ ওমিক্রন বিএফ.৭ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা যে তথ্যগুলি জানিয়েছেন,
১) বিএফ.৭-এ সংক্রমিত একজন রোগী একসঙ্গে ১৮-২০ জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই সংক্রমণ কমাতে জনবহুল এলাকায় যাওয়া কমিয়ে নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার প্রয়োজন।
২) বিএফ.৭-এ আক্রান্তদের মধ্যে প্রধানত জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা, নাক দিয়ে জল পড়া, শারীরিক ক্লান্তি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা গেছে।
৩) আক্রান্তদের মধ্যে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল উপসর্গ যেমন বমি এবং ডায়ারিয়াও দেখা যাচ্ছে।
৪) যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
৫) ভারতে যদি এই ভাইরাসে মানুষ আক্রান্ত হতে শুরু করে তাহলে এটি দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউয়ের থেকে বড় আকার ধারণ করবে এমনটাই আশঙ্কা। যদিও এই ভাইরাসের মারণ ক্ষমতা তুলনামূলক কম।
চীন প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার নতুন করে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ ওমিক্রন বিএফ.৭-এ আক্রান্ত হয়েছেন। সবথেকে বেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে গুয়াংজ়াউ ও চংকিং প্রদেশ থেকে। বেজিং-এ দৈনিক ৪ হাজারেরও বেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। সেই কারণেই, এখন থেকেই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে চাইছে ভারত সরকার। করোনা সংক্রমণ দূর করতে তৃতীয় ডোজের উপর জোর দিতে চাইছে কেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে ভারতে প্রথম ওমিক্রন বিএফ.৭ আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। গুজরাতের বায়োটেকনোলজি রিসার্চ সেন্টারে পরীক্ষার মাধ্যমে করোনার নতুন উপরূপ সম্পর্কে জানা যায়। এরপর ফের গুজরাটেই করোনা আক্রান্ত হন আরও এক ব্যক্তি। চীনের পাশাপাশি আমেরিকা, ব্রিটেন, বেলজিয়াম, জার্মানি, ফ্রান্সের মতো দেশগুলিতেও ওমিক্রন বিএফ.৭ উপসর্গ পাওয়া গেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন