মেয়ের জন্মদিনে অনলাইনে অর্ডার করে কেক আনিয়েছিলেন মা। সেই কেক খেয়েই যে এরকম ভয়ংকর পরিণতি হতে পারে তা ভাবতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। পাতিয়ালায় অনলাইনে অর্ডার করে আনানো কেক খেয়ে ১০ বছর বয়সী মেয়েটির মৃত্যু হয়। জন্মদিনের কেক খাওয়ার পর মৃত্যু হওয়ায়, নেটিজেনরা খাদ্য সরবরাহকারী অ্যাপ হিসাবে তালিকাভুক্ত ক্লাউড কিচেনের উপর দুর্বল নিয়ন্ত্রণের জন্য অনলাইন খাদ্য বিতরণ প্ল্যাটফর্মের কড়া সমালোচনা করেছে।
পুলিশ শনিবার জানিয়েছে, মেয়েটির পরিবারের সদস্যদের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির (IPC) ধারা ২৭৩ এবং ৩০৪-এ ধারার অধীনে একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ, জন্মদিনের কেক খাওয়ার পর ওই মেয়েটির মৃত্যু হয়। পরিবারের অন্য সদস্যরাও কেক খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
মৃত মেয়েটির মা কাজলের অর্ডার করা কেকের বিল কপি অনুযায়ী, পাতিয়ালায় ওই ঠিকানায় ‘কেক কানহা’ নামে কোনো দোকান নেই। পুলিশের সন্দেহ, বেকারিটি একটি ক্লাউড কিচেন। উপরন্তু, Zomato-এর আরেকটি রসিদ চালান দেখায় যে বিলিং করা হয়েছে অমৃতসর থেকে, পাটিয়ালা থেকে নয়। এই বিষয়ে একাধিকবার Zomato-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনও মন্তব্য করেনি।
ডাঃ নন্দিতা আইয়ার, একজন ফুড ও নিউট্রিশন বিশেষজ্ঞ তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বতন ট্যুইটার) পোস্ট করে জানিয়েছেন, Swiggy এবং Zomato-এর প্রতিটি তালিকায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা উচিত যে এটি একটি ক্লাউড কিচেন কিনা, যাতে সাধারণ মানুষ খাবারের অর্ডার দেবার আগে এই বিষয়ে সচেতন হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আইয়ার লিখেছেন, “এই ধরনের ঘটনাগুলি আমাদের কঠোর ভাবে মনে করিয়ে দেয় যে এই সম্পূর্ণ অনিয়ন্ত্রিত জায়গাগুলি থেকে আমরা যে খাবারের অর্ডার করি তাতে খাবারের সঙ্গে কী যায় সে সম্পর্কে আমাদের কোনও ধারণা নেই।"
ফিটনেস বিশেষজ্ঞ চিরাগ বরজাতিয়া বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা এখন এক রসিকতার পর্যায়ে দাঁড়িয়ে গেছে। নিজের এক্স হ্যান্ডেল পোষ্টে তিনি আরও বলেন,“আপনি জেনে আশ্চর্য হবেন যে ক্লাউড কিচেন হিসেবে খাবার সরবরাহকারী অ্যাপের তালিকায় এরকম ২০টি আলাদা আলাদা ‘রেস্তোরাঁ’ চলছে যেখানে একটি ঘরের মধ্যেই সবকিছু হচ্ছে। আপনি যে খাবারের অর্ডার দিয়েছেন তার আশেপাশে কতগুলো ইঁদুর এবং আরশোলা ছিল তা আপনি জানেন না এবং আপনি যে রান্না করা ডাল বা ভাত অর্ডার করেছেন তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে কিনা সে সম্পর্কেও আপনার একেবারেই ধারণা নেই।”
ঘটনা প্রসঙ্গে এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, "মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণের জন্য আমরা ভিসেরা রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি।"
তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় বেকারির মালিকের বিরুদ্ধে 'অবহেলায় মৃত্যু ঘটানো এবং বিষাক্ত খাবার সরবরাহের' অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
গত ২৪ শে মার্চ জন্মদিন উদযাপনের জন্য অনলাইনে কেকের অর্ডার করা হয়েছিল। যে কেক খাবার পর পরিবারের সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। পরিবারের সদস্যরা প্রাথমিক চিকিৎসার পর সুস্থ হলেও ১০ বছর বয়সী মেয়েটিকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃত মেয়েটির দাদু সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ২৪ মার্চ সন্ধ্যা ৬টার দিকে পরিবার অনলাইনে কেক অর্ডার করেছিল। “রাত ১১টার দিকে পুরো পরিবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। ছোট দুই মেয়ে বমি করতে থাকে। ওই সময় বাড়িতে পাঁচজন ছিলেন। বমি করে দেওয়ায় ছোটো মেয়েটির জীবন রক্ষা পেলেও, আমরা অন্য মেয়েটিকে হারিয়েছি।"
(Except for the headline, this story has not been edited by People's Reporter staff and is published from a syndicated feed.)
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন