অপরাধের পুনরাবৃত্তি! গাম্বিয়ার ৬৬ শিশু মৃত্যুর ঘটনায় CDSCO-র নজরে মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালস

২০১১ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে ভিয়েতনাম সরকার কোম্পানিটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। মেইডেন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছে ভারতের চারটি রাজ্যের গুণগত মান অনুযায়ী কোনও ওষুধই পাওয়া যায়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নিষিদ্ধ চার কাফসিরাপ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নিষিদ্ধ চার কাফসিরাপছবি ডঃ ক্যাথরিনের ট্যুইটার হ্যান্ডেলের সৌজন্যে
Published on

হরিয়ানার সোনিপাতের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা মেইডেন ফার্মাকিউটিক্যালসের তৈরী 'কাফ সিরাপ' খেয়ে প্রাণ হারিয়েছে গাম্বিয়ার ৬৬ জন শিশু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র তরফে এমন অভিযোগ ওঠার পরই, ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ভারত সরকার। তবে, এই সংস্থার বিরুদ্ধে নিম্নমানের ওষুধ তৈরীর অভিযোগ এই প্রথম নয়।

২০১১ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে ভিয়েতনাম সরকার ভারতীয় এই কোম্পানিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। ভারতের চারটি রাজ্যের গুণগত মান নির্ণায়ক মাপকাঠি অনুযায়ী এই সংস্থার কোনও ওষুধই পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছে, ১৯৯০ সালের নভেম্বরে চালু হয়েছিল মেইডেন। তখন এই সংস্থা শুধুমাত্র গাম্বিয়ায় সিরাপ তৈরী এবং রপ্তানি করত।

জনস্বাস্থ্যকর্মী দীনেশ ঠাকুর এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, আমাদের দেশেও হরিয়ানার এই সংস্থার ওষুধগুলির গুণগত মান নিয়ে যথেষ্ট সমস্যা রয়েছে। সেগুলিকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

পুরো বিষয়টির বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি জানান, ভারতের আলাদা কোনও নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা নেই। যদিও সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনকেই (CDSCO) কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তবে, দেশের প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা রয়েছে। গবেষণা চলাকালীন তিনি লক্ষ্য করেন, কেরালা এবং গুজরাটের নিয়ন্ত্রকরা বলেছেন মেইডেন ফার্মার ওষুধগুলি অত্যন্ত 'নিম্ন মানের'। এইভাবেই বিহারের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট এজেন্সি একটি সিরাপকে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল।

ঠাকুরের প্রশ্ন, সংস্থাটির রেকর্ড খারাপ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে তাদের ওষুধ তৈরীর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল? কয়েক বছর আগে মেইডেন ফার্মা সহ অনেক কোম্পানিকে নিম্নমানের ওষুধ তৈরীর জন্য কালো তালিকাভুক্ত করেছে ভিয়েতনাম। কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা শুধুমাত্র তাদের রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে এবং CDSCO-র ওয়েবসাইটে তার নাম রয়েছে। আদালতে বেশ কয়েকটি মামলাও চলছে যার সাথে এই সংস্থার পরিচালকরা যুক্ত।

হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভিজ মেইডেন কারখানার সামনে সাংবাদিকদের জানান, "নমুনাগুলি পরীক্ষার জন্য এক কেন্দ্রীয় ফার্মাকিউটিক্যাল ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। যদি ভুল কিছু পাওয়া যায় তবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

ভারতের মধ্যে যে যে রাজ্যগুলিতে মেইডেন ফার্মাকিউটিক্যালের বিরুদ্ধে সতর্কতা জারি রয়েছে তা হল :-

১) বিহার (২০০৮), (২০১১) : এরিথ্রোমাইসিন স্টিয়ারেট ১২৫ মিলিগ্রাম সিরাপ (খারাপ মানের ৪ ব্যাচ ওষুধ পাওয়া গেছে), মেথিলারগোমেট্রিন ট্যাব (জাল)

২) গুজরাট (২০১৩) : ম্যাসিপ্রো ট্যাবলেট (দ্রবীভূতকরণজনিত সমস্যা)

৩) জম্মু ও কাশ্মীর (২০২০) : সাইপ্রোহেপ্টাডিন হাইড্রোক্লোরাইড সিরাপ আইপি (গুণগত দিক থেকে নিম্নমানের)

৪) কেরালা (২০২১) : মেটফর্মিন ১০০০ ট্যাবলেট (দ্রবীভূতকরণজনিত সমস্যা), ইজিপ্রিন (আইপি মান পূরণ করেনি), মেটফর্মিন ৫০০ মিলিগ্রাম (দ্রবীভূতকরণজনিত সমস্যা), মাইকাল ডি ট্যাবলেট (নিম্ন মানের)

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নিষিদ্ধ চার কাফসিরাপ
WHO: ভারতে প্রস্তুত কাফ সিরাপ খেয়ে গাম্বিয়ায় ৬৬ শিশুর মৃত্যু - WHO-র সতর্কবার্তা জারি
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নিষিদ্ধ চার কাফসিরাপ
Bank Privatization: IDBI বিক্রির মাধ্যমে ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের যাত্রা শুরু কেন্দ্রের!

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in