বর্ষার পর প্রতি বছর দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করে ডেঙ্গি। বহু মানুষের মৃত্যু হয়। ভাইরাস ধরা পড়ার পর রোগীর শারীরিক অবস্থা বোঝা যায় না, শুধু পরীক্ষার মাধ্যমে খেয়াল রাখতে হয় প্লেটলেট কমছে কিনা। প্লেটলেট কমতে শুরু হলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু অনেক রোগীর অবস্থাই ততদিনে হাতের বাইরে চলে যায়। কোনও ভ্যাকসিনও নেই এই ভাইরাসের। তবে এবার ডেঙ্গি চিকিৎসায় আসছে দারুণ সুবিধা। আগেই রক্তপরীক্ষা করলে বিপদের আশঙ্কা বোঝা যাবে। ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও মিলেছে এই নয়া টেস্ট কিটের। মিলেছে পেটন্টও।
সম্প্রতি আইআইটি বোম্বের সহযোগিতায় কলকাতা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার এই অভিনব পদ্ধতির আবিষ্কার করেছেন। ওই চিকিৎসকের দাবি, এই 'বায়ো-মার্কার টেস্ট'ই বলে দেবে ডেঙ্গি আক্রান্তের পক্ষে প্রতিদিন সংক্রমণ কতটা বিপজ্জনক হতে যাচ্ছে বা শারীরিক অবস্থার কতটা উন্নতি হচ্ছে। ডেঙ্গি পজ়িটিভ আসার পরে প্রতি ৪৮ ঘণ্টা অন্তর এই পরীক্ষা করলে খারাপ পরিস্থিতির পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব। প্লেটলেট কমবে কি না তা আগেই জানা যাবে।
জানা গেছে, ২০১৪ সালে আইআইটি বম্বে-র বায়োলজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগিতায় শুরু হয়েছিল এই গবেষণা। ২ বছর আগে ডেঙ্গি চিকিৎসার এই নতুন কিট আবিষ্কার হয়। ২০১৯-এ আবেদন করা হয়, দিনকয়েক আগে মিলেছে পেটেন্ট।
উল্লেখ্য, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে ডেঙ্গি সংক্রমণ ভীষণ বেড়েছিল। সেই সময় আইআইটি বোম্বের সহযোগিতায় গবেষণা করা শুরু করেন চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার। চিকিৎসকের দাবি, এই নয়া পদ্ধতি ডেঙ্গি চিকিৎসায় আলোর আশা দেখাচ্ছে।
এবছরও ডেঙ্গির ভীষণ রকম বাড়বাড়ন্ত দেখা গিয়েছিল। রাজ্যে ডেঙ্গি সংক্রমণের সংখ্যা পৌঁছিয়েছিল প্রায় এক লক্ষে। মারাও গিয়েছেন বহু। রাজ্যে ডেঙ্গির সংক্রমণে প্রথমে ছিল উত্তর ২৪ পরগনা, দ্বিতীয় কলকাতা ও তৃতীয় মুর্শিদাবাদ। স্বাভাবিক ভাবেই মশাবাহিত এই রোগের থেকে নিস্তারের পথ পাচ্ছে না বঙ্গবাসী। ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে এর রূপ ও পরিণতি। তাই এই পরিস্থিতিতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অরুণাংশ তালুকদারের এই উদ্ভাবন ডেঙ্গি-চিকিৎসায় নতুন দিশা দেবে মনে করা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন