গত প্রায় দুই বছরে কোভিডে ভারতে কতজনের মৃত্যু হয়েছে, তার সরকারি পরিসংখ্যান এবং বাস্তবের সঙ্গে আকাশ-পাতাল ফারাক। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। বাস্তব সংখ্যা প্রায় সাত গুণ বেশি। সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে এমনই তথ্য জানা যায়।
“সায়েন্স পত্রিকা”য় প্রকাশিত বিভিন্ন দেশের গবেষকদের এই রিপোর্ট বলছে, প্রায় ৩০-৩২ লক্ষ লোক কোভিডে মারা গিয়েছেন। অথচ সরকারি হিসেবে বলছে, মৃতের সংখ্যার ৪ লক্ষ ৮৩ হাজার। ভারতের সরকারি হিসেবে প্রতি ১০ লাখে ৩৪৫ জন মারা গিয়েছেন। আমেরিকার হিসেবে সাত ভাগের মাত্র একভাগ। রিপোর্ট খুবই অসম্পূর্ণ। গত বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা সবথেকে বেশি। অতিরিক্ত যে ২৭ লক্ষের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে, তার ৭১ শতাংশ একই সময়ে ঘটেছে।
এই রিপোর্ট তৈরিতে কোন কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখা হয়েছে? সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দশ রাজ্যের সিভিল রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা, সরকারি হাসপাতালের তথ্যের সঙ্গে এক লক্ষ ৪০ হাজার মানুষের টেলিফোন সমীক্ষা করা হয়েছে। ২০২০ থেকে ২০২১ এর জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৩২ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। প্রাক মহামারীর তুলনায় কোভিড পর্বের মৃত্যু ২৭ শতাংশ বেশি।
আইআইএম আমেদাবাদের অধ্যাপক চিন্ময় টুম্বে জানান, কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক দেশে কম করে দেখানো হয়েছে। কিন্তু ভারতে যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে, তা ভীষণরকম ভুল। মহামারী বিশেষজ্ঞ প্রভাত ঝা-ও এই সমীক্ষা দলে ছিলেন। তাঁর বক্তব্য, হু (WHO) ভারতের দেওয়া রিপোর্টকে বিশেষ গুরুত্ব দেয় না। 'হু' যখন সংশোধিত রিপোর্ট পেশ করবে, তখন ভারত সরকারের দেওয়া তথ্য ছাড়া অন্য সূত্র ব্যবহার করবে।
কেন্দ্রের বক্তব্য, ভারতের জন্ম-মৃত্যু হিসাব রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত জেলা থেকে রাজ্যস্তর পর্যন্ত তা নথিভূক্ত হয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মাপকাঠি মেনেই কেন্দ্র রিপোর্ট তৈরি করেছে। বিভিন্ন রাজ্য আগে নথিভূক্ত না হওয়া রিপোর্ট সংশোধন করছে এবং তা যথেষ্ট স্বচ্ছভাবে হচ্ছে। কোভিডে মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং সব তথ্য আসা উচিত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন