করোনার তৃতীয় ঢেউ শেষে চতুর্থ ঢেউ আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। এমনটাই জানিয়েছে আইসিএমআর। শুধু তাই নয়, কলকাতা-সহ রাজ্যে শীঘ্রই করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করবে। কোভিডের বর্তমান তৃতীয় ঢেউ দ্রুত নিম্নমুখী হচ্ছে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রকও জানিয়েছে।
ওমিক্রন ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তা গত বছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপটের কাছে পৌঁছতে পারেনি। ‘ওমিক্রন’ ভ্যারিয়েন্টের চরিত্র দ্রুত ছড়িয়ে পড়া। তা নিয়েই আশঙ্কায় ছিলেন বিশেষজ্ঞরা। ওমিক্রন তার খেল দেখাচ্ছে বলে যখন আশঙ্কা দ্রুত গ্রাস করছে, দৈনিক সংক্রমণ তিন লক্ষ পার করছে, তখন সবাই ধরে নিয়েছিলেন দ্বিতীয় ধাপের থেকেও বড়োসড়ো ধাক্কা দিতে চলেছে ওমিক্রন। কিন্তু তা না হওয়ায় তৃতীয় ঢেউয়ের দাপট নিম্নমুখী ও তার জেরে কোভিড শেষের ইঙ্গিত দেখছে কেন্দ্র।
তবে এখনই কোভিড-বিধিতে গা-ছাড়াভাব নয়। গত প্রায় দু'বছর ধরে যেভাবে মানুষকে বিধি-নিষেধ পালন করতে হয়েছে, এখনও সেভাবেই সতর্ক হয়ে সবাইকে চলতে হবে। এমনই পরামর্শই দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। কেরল, তামিলনাড়ু-সহ দক্ষিণের বেশ কয়েকটি রাজ্যের সঙ্গে শুক্রবারই বৈঠক করেছেন তিনি। আজ বিকেলে বাংলা, বিহার, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করার কথা তাঁর।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক যে তথ্য দিয়েছে, সে অনুযায়ী, গত ১৩ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে কোভিডে আক্রান্তের হার পৌঁছেছিল ৩২.৮ শতাংশে। যদিও তা মাত্র দু’সপ্তাহেই এক ধাক্কায় কমে গিয়েছে। তা দাঁড়িয়েছে ৯.৫ শতাংশে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (এনসিডিসি) ডিরেক্টর সুজিত সিংয়ের কথায়, করোনার জিনোম সিকোয়েন্স অনুযায়ী বেশিরভাগ রাজ্যেই ‘ওমিক্রনে’র প্রভাব রয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং মহারাষ্ট্রে ডেল্টা বেশি।’ আর সেটাই বাংলার জন্য ‘শাপে বর’ হয়েছে। মনে করছেন ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চে’র (আইসিএমআর) মহামারীবিদ্যা বিভাগের প্রধান বিজ্ঞানী সমীরণ পান্ডা।
শুক্রবার তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত করোনার সবচেয়ে সাংঘাতিক ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা। সংক্রমণ হয়, হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর সম্ভাবনাও বেশি। তবে টিকার মাধ্যমে তা মোকাবিলা করা যায়। কিন্তু অন্যদিকে, ওমিক্রন দ্রুত সংক্রমিত হতে পারে, কিন্তু ডেল্টা পারে না। ডেল্টার চেয়ে তিনগুন বেশি গতিতে ছড়ায় ওমিক্রন। এবার পশ্চিমবঙ্গে ডেল্টা বেশি। ফলে দ্রুতহারে সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেকটাই কম। ফলে করোনার প্রকোপ পশ্চিমবঙ্গে শীঘ্রই কমে যাবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন