যথেষ্ট ভাবে টিকাকরণ হচ্ছে না। তাই করোনার তৃতীয় ঢেউ আসন্ন। এমনটাই জানাচ্ছেন আইসিএমআরের বিজ্ঞানীরা। তাঁদের সমীক্ষা জানাচ্ছে, টিকাকরণের পর সংক্রমণ হলেও কমে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর হার। দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ৫৭৭ জনের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। শুক্রবার তার ফল প্রকাশ করে আইসিএমআর।
সমীক্ষা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, টিকাকরণের পরও যাঁদের সংক্রমণ হয়েছে, তার ৮৬ শতাংশই হয়েছে করোনা ভাইরাসের ডেলটা প্রকরণের জন্য। তবে তাঁদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে নিতে হয়েছে মাত্র ১০ শতাংশকে। মৃত্যুর হার ০.০৪ শতাংশ। সমীক্ষা জানাচ্ছে, আগস্টে তৃতীয় তরঙ্গ শুরু হলে দৈনিক সংক্রমণ হবে ১ লক্ষ। যা প্রায় প্রথম তরঙ্গের সমান। দ্বিতীয় তরঙ্গে দৈনিক সংক্রমণ ৪ লক্ষ ছুঁয়েছিল। তৃতীয় ঢেউয়ের প্রভাব অনেকটা প্রথম পর্যায়ের সঙ্গে তুলনীয়। তবে এই সমীক্ষা সবটাই নির্ভর করছে যদি না কোনও নতুন প্রকরণের আবির্ভাব ঘটে। করোনা ভাইরাসের নতুন প্রকরণ এলে সে ক্ষেত্রে প্রভাব বাড়তে পারে।
আইসিএমআরের মহামারী বিভাগের প্রধান সমীরণ পান্ডা সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, জনজীবন সচল রাখতে বিভিন্ন বিধিনিষেধ শিথিল করতে হয়েছে। তৃতীয় ঢেউয়ের পক্ষে সেটি একটি কারণ। দ্বিতীয় বড় কারণ টিকাকরণের দুর্বল হার। টিকাকরণে গতি আনা সম্ভব হলে তৃতীয় তরঙ্গের সম্ভাবনা বা ব্যাপ্তি কমানো যেত। জুলাই থেকে টিকাকরণে গতি আনার দাবি জানিয়েছিলেন সরকারি বিশেষজ্ঞরা। টিকাকরণের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠীর প্রধান ভিকে পল বা এনকে অরোরাদের কথা এবং কাজ মেলেনি। বরং জুনের শেষ পর্বের তুলনায় জুলাইয়ে কমে গিয়েছে টিকাকরণের হার। জুনের শেষ সাত দিন গড় দৈনিক ডোজের হার ছিল ৬০ লক্ষ। জুলাইয়ে দিনে গড়ে ৪০ ডোজ দেওয়া হচ্ছে।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, দিনে ১ কোটি ডোজ কবে থেকে দেওয়া শুরু হবে বলতে পারছে না কেন্দ্র। ডোজের জোগান না বাড়িয়ে কেন্দ্র এখন জোর দিচ্ছে রাজ্যগুলিতে কঠোর বিধিনিষেধের ওপর। সংক্রমণ ফের বাড়ছে কেরল এবং মহারাষ্ট্রে। একজন সংক্রমিতের থেকে আর কতজনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, সেই হারকে পরিস্থিতি বিবেচনার সূচক ধরা হয়।
আইসিএমআর এবং লন্ডনের ইমপিরিয়াল কলেজের যৌথ মডেল বলছে, আগস্টে তৃতীয় ঢেউ শুরু হবে। পান্ডা বলেছেন, বিধিনিষেধ শিথিল করার জন্য দেখা উচিত পজিটিভিটি রেট কত। পজিটিভিটি রেট বাড়লে সতর্ক হওয়া উচিত। ভিড় এড়ানোর সম্ভাবনা কমানোর পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহারে জোর দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। পান্ডা বলেছেন, মাস্কের ব্যবহারে জোর দিলে সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেকটা কমানো যায়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন