প্রায়শই রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। যার ফলে রোগী মৃত্যুর মতো ঘটনাও ঘটে। কিন্তু চিকিৎসকদের সেই গাফিলতির অভিযোগ কাকে জানানো হবে? কীভাবে নথিভুক্ত করা হবে সেই অভিযোগ? এবার সেই নিয়ে গাইডলাইন আনছে স্বাস্থ্যভবন।
জানা গেছে, শুক্রবার স্বাস্থ্য অধির্কতা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধির্কতা-সহ স্বাস্থ্য ভবনের নয় সদস্যের একটি কমিটি আলোচনায় বসেন। সেখানে গাইডলাইন নিয়ে আলোচনা হয়।
স্বাস্থ্যভবনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দেশে বদলানো হয়েছে আইপি, সিআরপিসি আইন। তার জায়গায় নতুন আনা হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, জাতীয় সুরক্ষা সংহিতা। আর নয়া সেই আইনে স্পষ্ট নয় চিকিৎসকদের গাফিলতির অভিযোগ কোথায় নথিভুক্ত করা হবে।
ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, নয়া আইনে সরকারি চিকিৎসকদের মেডিকো-লিগ্যাল ঝুঁকি কোথায়? এবং কোন আইনে শাস্তি কতটা কঠিন? তানিয়ে সাবধান করতে এপ্রিল মাসে রাজ্য সরকারকে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
পুরানো আইনে চিকিৎসকদের গাফিলতিতে মৃত্যু ঘটলে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ নম্বর ধারায় গ্রেফতার করা হত চিকিৎসকদের। যেখানে গাফিলতিকে গ্রহণযোগ্য অপরাধ (কগনিজিবল অফেন্স) হিসেবে চিহ্নিত করে অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানার (নন-বেলেবল ওয়ারেন্ট) সংস্থান ছিল। নতুন আইনে এই ধারাটিকে জামিনযোগ্য রাখা হয়েছে। শাস্তির মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছে ২-৫ বছর পর্যন্ত। পাশাপাশি বাধ্যতামূলক জরিমানা।
এই বিষয়ে সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, "নতুন এই আইনে চিকিৎসকদের শাস্তি কার্যত আরও বাড়ানো হল। এতে চিকিৎসকদের ক্ষোভ আরও বাড়বে।" তাঁর মতে, পুরোনো আইনে চিকিৎসকদের গাফিলতার শাস্তি নানা ধারায় বিবেচনা করা হলেও, নতুন আইনে সেটা নেই।
এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘মডার্ন মেডিসিনের ব্যাপকতা, দুনিয়াজুড়ে তার নিরন্তর গবেষণা ও প্রযুক্তির বিপুল উন্নতিতে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা পদ্ধতি প্রতি মুহূর্তে বদলে যাচ্ছে। কোনও চিকিৎসা ভুল না ঠিক, সেটা বিজ্ঞান নির্ধারণ করে। পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়া এক লহমায় তা বলে দেওয়া সম্ভব নয়। কোনও চিকিৎসক রোগীমৃত্যু চান না।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন