সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষার (নিট) প্রশ্নফাঁস নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। এই কাণ্ডে কারা জড়িত, তা খুঁজতে তদন্তে নেমেছে সিবিআই। আর এবার তদন্তে নেমে উঠে এল সঞ্জীব মুখিয়ার নাম। এই কাণ্ডে তাকেই মাস্টার মাইন্ড হিসাবে চিহ্নিত করছেন তদন্তকারীরা।
বিহার পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, নালন্দার বাসিন্দা সঞ্জীব মুখিয়ার আসল নাম সঞ্জীব সিং। তিনি পেশায় বিহারের নুরসরাইয়ের হর্টিকালচার কলেজের কর্মী। তাঁর স্ত্রী মমতা সিং। যিনি একটা সময় স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানও ছিলেন। ২০১৬ সালে বিহারের পাবলিক সার্ভিস কমিশন কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে যুক্ত ছিলেন সঞ্জীব। গ্রেফতারও হন সেই সময়। এরপর মুক্তি পেয়ে এই কাজে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। রবি অত্রি নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে মিলিত ভাবে একটি গ্যাং চালাতেন বলে অভিযোগ। সেই গ্যাংয়ের নাম ‘সলভার গ্যাং’।
এরকমই এক প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে জড়িত সঞ্জীবের ছেলে শিবকুমারও। পেশায় শিক্ষক শিবকুমার বিহারের একাধিক পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে অভিযুক্ত। বর্তমানে বিহারের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় জেলবন্দি রয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, এক অধ্যাপকের কাছ থেকে আগেই নিটের প্রশ্নপত্র পেয়েছিলেন সঞ্জীব। পরীক্ষার আগের দিন সেই প্রশ্নপত্রের সঙ্গে উত্তরপত্র বিলি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেন তিনি। অভিযোগ, নিট পরীক্ষার এক দিন আগে পটনা এবং রাঁচীতে লার্ন প্লে স্কুল অ্যান্ড বয়েজ হস্টেলে ডাক্তারি পড়ুয়াদের নিয়ে আসেন সঞ্জীব। সেখানেই তাদের প্রশ্ন এবং উত্তর বিলি করা হয়। এই প্রশ্নফাঁস সামনে আসতেই নিখোঁজ তিনি। তদন্ত করছে বিহার পুলিশ। তদন্তকারীদের আশঙ্কা, নেপালে পালিয়ে যেতে পারেন সঞ্জীব।
প্রশ্নফাঁসকাণ্ডে নাম উঠে এসেছে সঞ্জীবের ভাগ্নে রকিরও। রাঁচীতে একটি হোটেল চালান রকি। তার সন্ধানও শুরু করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ৪ জুন নিটের ফল প্রকাশ হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে ৬৭ জন পরীক্ষার্থী ৭২০ নম্বরের মধ্যে ৭২০ নম্বরই অর্জন করেছে। আবার এমন অনেক পরীক্ষার্থী রয়েছে যারা ৭১৭, ৭১৮ নম্বর পেয়েছে। কিন্তু নেগেটিভ মার্কিং দিলে ৭১৭ বা ৭১৮ নম্বর কোনোভাবেই একজন পরীক্ষার্থী পেতে পারে না। এনটিএ জানিয়েছিল ওই প্রার্থীদের গ্রেস মার্কস দেওয়া হয়েছে। তারপরই দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা দায়ের হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন