বীরভূমের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধরের মনোনয়ন বাতিল করেছিল কমিশন। কারণ তিনি ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেট জমা দিতে পারেননি। আর এবার তার পাল্টা হিসাবে বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজী নরুল ইসলাম এবং দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ের মনোনয়ন পত্র বাতিল করার দাবি তুলল বিজেপি। হাজী নরুলের মনোনয়ন পত্র বাতিলের দাবি তুলেছেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রও।
বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে ওই দুই তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের দাবি তুললেন রাজ্য বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ সরকার। জগন্নাথ সরকার অভিযোগ করেন, ওই দুই প্রার্থীর মনোনয়নে গলদ আছে। তাই কমিশনের কাছে দ্রুত ওই দুই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের আবেদন জানিয়েছে বিজেপি। প্রয়োজনে তারা সুপ্রিম কোর্টেও যাবে বলে জানান।
বুধবার জগন্নাথ সরকার বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজী নরুল ইসলামের মনোনয়ন পত্র বাতিলের আবেদন জানান। তিনি দাবি করেন, হাজী নরুল পঞ্চদশ লোকসভার সদস্য ছিলে। যার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৪ সালের ১৮ মে। অষ্টাদশ লোকসভায় ফের প্রার্থী হয়েছেন হাজী নরুল। এর জন্য তিনি মনোনয়ন দাখিল করেছেন ৭ মে। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও প্রার্থী শেষ ১০ বছরে যদি কোনও সরকারি পরিষেবা পেয়ে থাকেন, সরকারি কোনও বিল যদি তাঁর বাকি থাকে, তা মিটিয়ে দিতে হয়। বা কোনও বাকি না থাকলেও সেটা জানাতে হবে হলফনামায়। হাজি নরুল ১০ বছরের মেয়াদ শেষের ১২ দিন আগে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। বিজেপির দাবি, তাঁকে ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। কিন্তু মঙ্গলবার বিকেল ৩ টে পর্যন্ত সময় থাকলেও, তিনি কোনো ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেট জমা দেননি।
অন্যদিকে, হাজী নরুলের পাশাপাশি দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ের মনোনয়ন বাতিলেরও আবেদন জানিয়েছে বিজেপি। জগন্নাথ সরকারের অভিযোগ, মালা রায় কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন। যা ‘অফিস অফ প্রফিট’-এর আওতাধীন। ফলে ওই পদে ইস্তফা না দিয়ে লোকসভা ভোটের প্রার্থীপদের জন্য মনোনয়ন দেওয়া যায় না। মালা রায় ওই পদে থাকাকালীন কোনও বেতন না নিলেও তিনি লাভজনক পদে রয়েছেন বলেই বিবেচ্য হবেন।
যদিও মালা রায় এই প্রসঙ্গে জানান, কমিশনে তাঁর সমস্ত কাগজপত্র দেওয়া আছে। ২০১৯ সালে তিনি লোকসভা ভোটে জেতার পর কলকাতা পুরসভা থেকে কোনো সাম্মানিক নেননি। বসিরহাট এবং দক্ষিণ কলকাতায় নির্বাচন আগামী ১ জুন।
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের মুখে পদত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন আইপিএস অফিসার দেবাশিস ধর। এরপর বিজেপি তাঁকে বীরভূম কেন্দ্রের প্রার্থী করে। কিন্তু কমিশনে তাঁর ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেট জমা না দেওয়ায় মনোনয়ন পত্র খারিজ হয়ে যায় দেবাশিসের। পরে কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন