অষ্টাদশ লোকসভায় মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুরের প্রার্থী করা হয় বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষকে। কিন্তু মঙ্গলবার ফলপ্রকাশের পর দেখা গেছে তৃণমূলের কীর্তি আজাদের কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৯৮১ ভোটে হেরেছেন দিলীপ। এরপরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এই পরাজয়ের কারণ কি কেন্দ্র বদল?
বুধবার সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ ঘোষ জানান, “অসম্ভব কিছু না। সব সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়ে। বাংলার মানুষ বলবেন এইগুলো ঠিক হয়েছে না ভুল হয়েছে। আমাকে দল যখন যা বলেছে আমি নিষ্ঠার সঙ্গে করেছি, ফাঁক রাখিনি। বর্ধমান-দুর্গাপুর কঠিন সিট ছিল। যারা সেখানে সেদিন ছিলেন তারাও মেনেছেন লড়াই হয়েছে। দলের পলিসির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। যারা আমাকে ওখানে পাঠিয়েছেন তারা ভাববেন।“
এরপরেই দিলীপ ঘোষ জানান, “আমরা ২০২১ পর্যন্ত এগিয়েছি। আমরা ১৮ সাংসদ এবং ৭৭ বিধায়ক পেয়েছিলাম। ওখানেই আমাদের গ্রোথ আটকে গেছে। ভোটের শতাংশ একই আছে। আমরা গত ৩ বছরে এগোতে পারিনি। আমরা যে গতিতে এগোচ্ছিলাম সেটা সারা দেশে আলোচনার সাব্জেক্ট ছিল। সবাই অনেক আশা করেছিলাম। কিন্তু সব কর্মীরা নামেনি। গতি রুদ্ধ হয়ে গেলে কর্মীরা হতাশ হয়ে যাবেন।“
ভোটের প্রচারের সময় তাঁকে আচমকাই পাঠিয়ে দেওয়া হয় আন্দামানে প্রচারের কাজে। এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ বলেন, “কালাপানি কাকে বলে আমি জানি। চক্রান্ত এবং কাঠিবাজি রাজনীতির অঙ্গ। আমি ব্যাপারটা সেভাবেই নিয়েছি। তার পরেও যথেষ্ট পরিশ্রম করেছি। কিন্তু সফলতা আসেনি। রাজনীতিতে সবাই কাঠি নিয়ে ঘুরতে থাকে।“
হার প্রসঙ্গে তিনি জানান, “আমি যেটুকু রাজনীতি বুঝি, দেশে বহুবার এরকম উত্থান পতন হয়েছে। রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর বিজেপি ২ টো সিট পেয়েছিল। অটল বিহারী বাজপেয়ীর মতো লোককে খারাপ ভাবে হারতে হয়েছিল। বাজপেয়ী সরকার চলে যাওয়ার আগে মমতার মাত্র ৮ টা সিট ছিল। উনি বাড়িয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। আমার কর্মীদের এই উত্থান পতনকে সঙ্গী করেই এগোতে হবে।“
তিনি আরও জানান, “ব্যক্তিগত রেষারেষির এবং ভুল পলিসির জন্য এইভাবে হাজার হাজার কর্মীর আত্মত্যাগ বিফলে চলে গেলে পরবর্তী কালে তাদের দলের কাজে লাগানো মুশকিল হয়ে যাবে। মানুষের পার্টির ওপর আস্থা চলে যাবে। কাল থেকে অনেকে ঘরছাড়া। তাঁরা আগের অভিজ্ঞতা থেকে ভয় পাচ্ছে। আমাকে দেখে অনেকে বেরিয়েছিল। পার্টির এবার ভাবা উচিৎ। যে কর্মীরা পার্টির জন্য বেরোয় তাঁরা যেন তাঁদের সংকটে পার্টিকে পাশে পায়।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন