হিন্দি বলয়ের অন্যতম প্রধান রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। তেমনই জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রেও উত্তরপ্রদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভরকেন্দ্র। এক কথায় দিল্লির মসনদে বসার জন্য উত্তরপ্রদেশকেই প্রধান হিসাবে ধরে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি। আর এবার সেই উত্তরপ্রদেশই মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে বিজেপির নেতৃতাধীন এনডিএ থেকে। এগিয়ে বিরোধী ইন্ডিয়া।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট অনুসারে বিকেল সোয়া চারটে পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের ৮০ টি আসনের মধ্যে বিরোধী ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে আছে ৪১ টি আসনে। যেখানে সমাজবাদী পার্টি ৩৪ এবং কংগ্রেস ৭ টি আসনে এগিয়ে। অন্যদিকে, বিজেপি একা এগিয়ে ৩৩ টি আসনে। সহযোগী আরএলডি ২টি তে।
এর আগে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি উত্তরপ্রদেশে ৬৪ আসনে জয়ী হয়েছিল। বিজেপি একাই পেয়েছিল ৬২ আসন। ২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশে এনডিএ -র প্রাপ্ত আসন ছিল ৭৩, যার মধ্যে বিজেপি একাই ৭১ আসনে জয়ী হয়েছিল। সেই নিরিখে এবারে প্রায় অর্ধেকেরও কম আসনে নেমে এসেছে বিজেপি।
যদিও গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনও কিছুই চূড়ান্ত নয়। তবে বিজেপির এই পিছিয়ে পড়ার পিছনে উঠে এসেছে একাধিক তত্ত্ব। বিশেষজ্ঞদের মতে, জানুযারিতে বিজেপির রামমন্দির উদ্বোধন মানুষের মধ্যে তেমন আবেগ তৈরি করতে পারেনি। বিশেষ করে বিজেপির এই ফলাফলের পিছনে মোদী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের শীতল সম্পর্কের কথাও সামনে আসছে। এছাড়াও গণনার প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একবার পিছিয়ে পড়েছিলেন। যা অবশ্যই নজিরবিহীন।
লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রচারে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন ব্যানারে দেখা গিয়েছিল শুধু মোদীর ছবি। যদিও পরে সেই ব্যানার পরিবর্তন করে মোদী ও যোগীর ছবি একসঙ্গে পোষ্টার দেওয়া হয়। একাধিক অনুষ্ঠানেও যোগীকে কার্যত এড়িয়ে যেতে দেখা গিয়েছে মোদিকে। পাশে বসা অমিত শাহের সঙ্গে খোশগল্প করলেও, একটিও বাক্য বিনিময় করতে দেখা যায়নি যোগীর সঙ্গে। পাশাপাশি, উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রিসভায় দিল্লির বাছাই করা একাধিক মন্ত্রীকে নিয়োগেও যোগীর আপত্তি ছিল বলে শোনা যায়।
এরপর গুঞ্জন ওঠে চলতি লোকসভাতে মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে যোগীকে। বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিতে এগিয়ে এলেও, কেজরিওয়ালের সেই মন্তব্য খারিজ করতে এগিয়ে আসেননি বিজেপি নেতৃত্ব। বরং কিছু দিন আগেই উত্তরপ্রদেশের 'বাহুবলী' ব্রিজভূষণ সিংহকে প্রকাশ্য সভায় যোগীর সমালোচনা করতে শোনা যায়। সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবও উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে মুখ খোলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন