দেশের সম্পত্তি সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভাগ করে দেবে কংগ্রেস! রাজস্থানে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে এমনই বলতে শোনা গেল দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। মোদীর এই মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। মোদীকে কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি।
রবিবার রাজস্থানের জেলোরে বিজেপি প্রার্থী লাম্বারাম চৌধুরীর হয়ে নির্বাচনী প্রচারে যান নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই জনসভা থেকে তিনি বলেন, 'কংগ্রেসের ইশতেহারে বলা হয়েছে যে মা বোনেদের কাছে থাকা সোনার হিসেব করবে কংগ্রেস। তারপর সেই সম্পত্তি ভাগ করে দেওয়া হবে। এই শহুরে নকশালরা মা, বোনেদের মঙ্গলসূত্রও ছাড়বে না। কাদের মধ্যে সেই সম্পত্তি ভাগ করা হবে জানেন? মোনমোহন সিং-র সরকার বলেছিল দেশের সম্পদের ওপর মুসলিমদের প্রথম অধিকার। এর মানে তারা এই সম্পদ বিতরণ করবে যাদের বেশি সন্তান আছে, সেই অনুপ্রবেশকারীদের কাছে।"
মোদী আরও বলেন, "এই ধরণের মানসিকতা কি গ্রহণযোগ্য? সরকারের কি সেই ক্ষমতা আছে যে আপনার কষ্ট করে অর্জন করা সম্পত্তি বিতরণ করার। মা, বোনেদের সোনার গয়না শুধু দেখানোর জন্য নয় এটা তাঁদের আত্মসম্মানের সাথে জুড়ে রয়েছে। তাঁদের জীবনের স্বপ্নের সাথে জড়িয়ে আছে। আর আপনি সেটা ছিনিয়ে নেওয়ার কথা বলছেন!"
মোদীকে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন রাহুল গান্ধী। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, "নির্বাচনের প্রথম দফার হতাশার পর নরেন্দ্র মোদীর মিথ্যাচার এতটাই নিম্নমানের হয়েছে যে ভয়ে তিনি মূল বিষয় থেকে সাধারণ মানুষকে দূরে ঠেলে দিতে চাইছেন। আসলে কংগ্রেসের বিপ্লবী ইশতেহারের প্রতি মানুষের বিপুল সমর্থন দেখে বিজেপি চিন্তায় রয়েছে। দেশ এখন তার মূল ইস্যু, কর্মসংস্থান, পরিবার এবং ভবিষ্যতের কথা ভেবেই ভোট দেবে"।
কংগ্রেস সভাপতি খাড়গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর মন্তব্যকে "ঘৃণাত্মক বক্তৃতা" হিসাবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “ক্ষমতা অর্জনের জন্য মিথ্যা বলা এবং বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলার জন্য ভিত্তিহীন কথা বলা সঙ্ঘ এবং বিজেপির প্রশিক্ষণের বিশেষত্ব। এই দেশের ১৪০ কোটি মানুষ এই মিথ্যায় ভুলবে না। আমাদের ইশতেহার প্রতিটি ভারতীয়ের জন্য, এটি সবার জন্য সমতা ও ন্যায়বিচারের কথা বলে।"
রাহুল গান্ধীর পর মোদীর সমালোচনায় সরব হয়েছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবও। তিনি বলেন, "শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বও জানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মিথ্যা বলেন। তিনি যেভাবে কংগ্রেসের 'ন্যায় পত্র' এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সম্পর্কে মিথ্যা ছড়ালেন তা নোংরা রাজনীতির উদাহরণ।"
শিবসেনা (ইউবিটি)-এর প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীর কথায়, "অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর, ঘৃণ্য মন্তব্য। দেশকে বিভক্ত করতে আর কত দূর যাবে এঁরা?"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন