আগামী ২৫ নভেম্বর মরুরাজ্যে ভোটগ্রহণ। তার আগে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের ছেলে বৈভবকে বৈদেশিক মুদ্রা আইন লঙ্ঘনের মামলায় তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। পাশাপাশি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক গোবিন্দ সিংহ দোতাসরা এবং দলের প্রথম সারির নেতা ওমপ্রকাশ হুদলার বাড়িতে তল্লাশি করেছেন ইডি আধিকারিকরা। কেন্দ্রীয় সংস্থাটির এই 'অতি-সক্রিয়তা'র তীব্র নিন্দা করেছেন অশোক গেহলট এবং কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়্গে।
২০২০ সালে গেহলট-পুত্রের বিরুদ্ধে ‘শিবনার হোল্ডিংস’ নামক মরিশাসের একটি সংস্থার থেকে অবৈধভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন জয়পুরের দুই ব্যক্তি। বৈভবের বিরুদ্ধে সেই সময় অভিযোগ ছিল, ২০১১ সালে ওই টাকা নিয়ে একটি হোটেলের আড়াই হাজার শেয়ার কেনেন তিনি।
এরপর চলতি বছরের শুরুতে বৈভবের বিরুদ্ধে ইডির কাছে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ করেন মরুরাজ্যের বিজেপি সাংসদ কিরোদি লাল মীনা। এরপরেই বৈভবকে তলব করে তাঁকে শুক্রবার দিল্লিতে সদর দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
মরুরাজ্যের হসপিটালিটি গ্রুপ ট্রাইটন হোটেলস অ্যান্ড রিসোর্ট প্রাইভেট লিমিটেড এবং ভার্ধা এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে যোগসাজশের উপর ভিত্তি করেই বৈভবকে তলব করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ওই সংস্থার মালিক ও প্রবর্তক শিবশংকর শর্মা, রতনকান্ত শর্মা এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ও জিজ্ঞাসাবাদ করার পরেই বৈভব গেহলটকে তলব করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর।
নির্বাচনের ঠিক আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ছেলেকে তলব করায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অশোক গেহলট। তিনি টুইটারে (বর্তমানে X) এই নিয়ে লেখেন, “২৫ তারিখ রাজ্যের মহিলাদের জন্য একাধিক কল্যাণমূলক প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দেয় কংগ্রেস এবং ২৬ তারিখ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গোবিন্দ সিংহ দোতাসরার বাড়িতে হানা দেয় ইডি এবং আমার ছেলে বৈভবকে তলব করে। এখন নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পারছেন, আমি এতদিন ধরে কী বলতে চাইছিলাম। বিজেপি চায় না রাজ্যে মহিলা, কৃষক ও দরিদ্ররা কংগ্রেসের দেওয়া গ্যারান্টির সুবিধা পান। আর তাই রাজ্যে রোজ রোজ তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি।”
বৃহস্পতিবার ছেলে বৈভবের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে অশোক গেহলট জানিয়েছেন, “আমি যতদূর জানি, বৈভবের শুধুমাত্র একটি ট্যাক্সি কোম্পানিই রয়েছে। ওই কোম্পানিতে রতনকান্ত শর্মা অংশীদার ছিলেন। কিন্তু এখন তাঁরা আলাদা আলাদাভাবে কাজ করে।”
অন্যদিকে সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় বেআইনি আর্থিক লেনদেনের সন্ধান পেতেই গোবিন্দ এবং ওমপ্রকাশের একাধিক ঠিকানায় তল্লাশি অভিযান করেছে ইডি।
কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়্গেও এই নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করে টুইটারে লেখেন, “রাজস্থানে পরাজয় নিশ্চিত দেখেই শেষ পদক্ষেপ নিয়েছে বিজেপি। মোদী সরকারের স্বৈরাচার গণতন্ত্রের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকারক। জনগণই বিজেপিকে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির এইভাবে অপব্যবহার করার উপযুক্ত জবাব দেবে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন