পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের মুখে আরও এক দফা ইলেক্টোরাল বন্ডের জন্য সবুজ সঙ্কেত দিল কেন্দ্রীয় সরকার। শনিবার ২৯তম ইলেক্টোরাল বন্ডের জন্য এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আগামী ৬ নভেম্বর থেকে এই বন্ড বিক্রি শুরু হবে।
শনিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভারত সরকার স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার বিভিন্ন শাখাকে ইলেক্টোরাল বন্ডের ২৯ তম বিক্রি ও ভাঙানোর অনুমতি দিচ্ছে। আগামী ৬ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত এই বন্ড বিক্রি ও ভাঙানো যাবে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের মার্চ মাসে প্রথম দেশে ইলেক্টোরাল বন্ডের বিক্রি শুরু হয়। একমাত্র স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াই ইলেক্টোরাল বন্ড বিক্রি ও ভাঙাতে পারে।
স্টেট ব্যাঙ্কের বেঙ্গালুরু, লখনৌ, শিমলা, দেরাদুন, কলকাতা, গুয়াহাটি, চেন্নাই, পাটনা, নিউ দিল্লি, চন্ডীগড়, শ্রীনগর, গান্ধীনগর, ভোপাল, রাইপুর এবং মুম্বাই শাখায় থেকে এই বন্ড কেনা ও ভাঙানো যাবে।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক আরও জানিয়েছে, ইস্যু করার তারিখ থেকে এই বন্ডগুলির বৈধতা হবে মাত্র ১৫ দিনের। এবং নির্ধারিত দিন শেষ হয়ে যাবার পর কোনও রাজনৈতিক দল এই বন্ড আর ভাঙাতে পারবে না। কোনও রাজনৈতিক দল যেদিন এই বন্ড ভাঙানোর জন্য ব্যাঙ্কে জমা দেবেন সেইদিনই ওই রাজনৈতিক দলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়বে।
স্বীকৃত যে কোনও রাজনৈতিক দল, যারা গত লোকসভা অথবা বিধানসভা নির্বাচনে কমপক্ষে ১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন তারাই ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে অনুদান পেতে পারেন। যে কোনও ভারতীয় ব্যক্তি অথবা সংস্থা ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে যে কোনও রাজনৈতিক দলকে অনুদান দিতে পারে।
নভেম্বর ৭ থেকে শুরু হচ্ছে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা এবং মিজোরাম - এই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। যে নির্বাচন চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এবং এই পাঁচ রাজ্যের ভোট গণনা হবে আগামী ৩ ডিসেম্বর।
নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এর আগেই মামলা দায়ের করা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। যে মামলা পাঠানো হয় সাংবিধানিক বেঞ্চে। বেঞ্চ জানিয়েছে, বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে ভারতীয় সংবিধানের ধারা ১৪৫(৩) অনুসারে এই বিষয়ে দাখিল হওয়া একাধিক আবেদন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে পাঠানো হবে।
এডিআর, সিপিআই(এম), কংগ্রেস নেতা জয়া ঠাকুর, স্পন্দন বিসোয়াল সহ একাধিক সংস্থা, রাজনৈতিক দল এবং ব্যক্তি এই বন্ডের বিরোধিতা করে আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে।
নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে ২০২১-২২ সাল পর্যন্ত সমস্ত রাজনৈতিক দল অনুদান পেয়েছে মোট ৯,১৮৮ কোটি টাকারও বেশি। যার মধ্যে ADR (অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমোক্রেটিক রিফর্মস)-এর তথ্য অনুসারে, বিজেপি এককভাবে এই অনুদানের ৫৭ শতাংশ পেয়েছে। কংগ্রেস পেয়েছে ১০ শতাংশের কিছু বেশি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন